কাশ্মীর অবজারভার, এএনআই : পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত জম্মু ও কাশ্মীরের গ্রামগুলোয় নতুন বাংকার তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। বুধবার ও তার আগের দিন মঙ্গলবার কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখার (এলওসি) কাছাকাছি গ্রামগুলো পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ তথ্য জানান। গত বুধবার উত্তর কাশ্মীরের বারামুলা জেলার উরির সালামাবাদ, লাগামা, বান্দি ও গিংগাল এলাকা পরিদর্শন করেন ওমর আবদুল্লাহ। এ সময় সাংবাদিকেরা তাঁর কাছে ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতির বিষয়ে প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চান। এ বিষয়ে ওমর আবদুল্লাহ বলেন, গোলাবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ‘ব্যক্তিগত’ বাংকার নির্মাণে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবি জানানো হবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জম্মু বা কাশ্মীরের যেখানেই আমি গেছি, সবখানে আরও বাংকার নির্মাণের দাবি উঠেছে। মানুষের আশঙ্কা, পরিস্থিতি যেকোনো সময় খারাপ হতে পারে। তাই তাঁরা ব্যক্তিগত বাংকারের দাবি জানিয়েছেন।’ ওমর আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা প্রথমে তাৎক্ষণিকভাবে জনগণকে ত্রাণ দেব। তারপর যেসব এলাকা গোলাবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেসব এলাকায় বাংকার তৈরির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করব।’
ইনডিভিজুয়্যাল বা ব্যক্তিগত বাংকার বলতে এমন আশ্রয়স্থল বোঝায়, যেখানে একজন বা একটি ছোট পরিবার আশ্রয় নিতে পারে। বোমা হামলা, পারমাণবিক বিস্ফোরণ, যুদ্ধ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মানুষ এসব বাংকারে আশ্রয় নেন। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাম পরিদর্শনকালে ওমর আবদুল্লাহর সঙ্গে উপদেষ্টা নাসির আসলাম ওয়ানি, উরির বিধায়ক সাজাদ উরি এবং জেলার ঊর্ধ্বতন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার গোলাবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্তদের দেখতে কুপওয়ারা জেলায় যান ওমর আবদুল্লাহ। জেলার কার্নাহ সীমান্ত উপবিভাগের টাংধার, হাজিনার্ড, নাচিয়ান, শামসপোরা, বাঘবেলা, বাটপোরা ও তারবনি এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি। সেখানে তিনি সর্বশেষ পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। টাংধারের কমিউনিটি বাংকার পরিদর্শনকালে মুখ্যমন্ত্রী সংকটকালে জীবন রক্ষায় এসব বাংকারের ভূমিকার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে এসব বাংকার জীবন রক্ষাকারী আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করে। আমরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী মানুষের জন্য অতিরিক্ত বাংকার নির্মাণ করব।’
গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এ হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে ৬ মে রাতে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। পাকিস্তান তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ গড়ে তোলে। হামলার সঙ্গে সঙ্গে এলওসি–সংলগ্ন এলাকায় ভারত-পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি গোলাবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটে। পরে ভারতের সামরিক স্থাপনাসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায় পাকিস্তান।