২০ মার্চ, রয়টার্স : ইন্দোনেশিয়াতে এখন থেকে বেসামরিক পদে আরও বেশি হারে নিয়োগ পাবেন সামরিক কর্মকর্তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার এ রকম একটি সামরিক বিলে সংশোধনী অনুমোদন করেছে দেশটির পার্লামেন্ট। এদিকে বিলটি নিয়ে সুশীল সমাজে কঠোর সমালোচনা চলছে। তাদের দাবি, বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশকে স্বৈরশাসনের দিকে নিয়ে যেতে পারে এই বিল। তাদের আশঙ্কা, সামরিক কর্মকর্তারা বেসামরিক ক্ষেত্র দাপিয়ে বেড়ালে সাবেক প্রেসিডেন্ট সুহার্তোর মতো আরেকটি নিউ অর্ডার যুগ দেখা দিতে পারে। তবে তাদের আশঙ্কার সঙ্গে একমত নন পার্লামেন্টারি স্পিকার পুয়ান মহারানি। প্লেনারি কাউন্সিলে বিলের ওপর ভোট কার্যক্রমের নেতৃত্ব এবং আনুষ্ঠানিকভাবে এটিকে আইনে পরিণত করার ঘোষণা দেন তিনি। স্পিকার বলেছেন, আইনটি পুরোপুরি গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ইন্দোনেশিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো সামরিক বাহিনীর ভূমিকা আরও বিস্তৃত করেছেন। সুহার্তোর আমলে বিশেষ বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন তিনি। সুবিয়ান্তোর আমলে এমন কিছুক্ষেত্রে সেনাবাহিনীকে যুক্ত করা হয়েছে যা আগে শুধুই বেসামরিক প্রশাসনের দায়িত্ব ছিল। যেমন বিনামূল্যে শিশুদের খাবার বিতরণ কর্মসূচি। রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন ক্ষেত্রে সামরিক বাহিনীর সংশ্লিষ্টতার সমালোচনা করে আসছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। তাদের আশঙ্কা, এভাবে চলতে থাকলে একসময় ক্ষমতার অপব্যবহার, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং দায়মুক্তির সংস্কৃতি তৈরি হতে পারে। তবে তাদের আশ্বস্ত করতে সরকার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিল অনুযায়ী, স্টেট সেক্রেটারিয়েট এবং অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়সহ বেসামরিক পদ গ্রহণের আগে সেনাবাহিনী থেকে কর্মকর্তাদের পদত্যাগ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এদিকে, সামরিক কর্মকর্তারা যেন ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে বাণিজ্যে জড়িয়ে না পড়েন, সেটা প্রতিহত করতে তাদেরকে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন এক আইনপ্রণেতা। অবশ্য, এসব বক্তব্যে আশ্বস্ত হননি সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন গণতান্ত্রিক গোষ্ঠী ও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জাকার্তায় পার্লামেন্ট ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করতে যাচ্ছে তারা।