ইন্টারনেট: গাজার ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক বশির আবু আলশায়ের। ৪২ বছর বয়সি এই ব্যক্তি নিজের ক্যামেরা দিয়ে গাজার ভয়াবহ চিত্র বিশ্বের সামনে তুলে ধরেন। সাংবাদিকতা করেই চলে তার রুটিরুজি। কিন্তু ইসরাইলের অমানবিকতায় তার সন্তানরা ঠিকমতো খেতে পারছে না। চরম দারিদ্রতায় দিন পাড় করছেন বশির। এবার উপায় না পেয়ে নিজের ক্যামেরা বেঁচে শিশুদের রুটির ব্যবস্থা করছেন অবরুদ্ধ গাজার এই সাংবাদিক। নিজের অতিপ্রিয় ক্যামেরাটি বিক্রির পোস্ট দিয়েছিলেন বশির। তিনি বলেন, ‘আমার পোস্টটি কোনো প্রচারণা ছিল না; এটি ছিল একজন ডুবে যাওয়া মানুষের খড়কুটো ধরে বেঁচে থাকার আশা। এক টুকরো রুটি এখন স্বপ্নের মতো। আমি আমার বাচ্চাদের অনাহারে থাকতে দেখেছি, এবং আমার বাড়িতে একেবারেই খাবার অবশিষ্ট ছিল না। আমার ক্যামেরা ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট ছিল না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার তৃতীয় নয়নের বিনিময়ে হলেও আমার বাচ্চাদের বাঁচান।’ গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস ঘোষণা করেছে- গাজাজুড়ে দুর্ভিক্ষ আরও খারাপ হচ্ছে। এই বিপর্যয় এড়াতে প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে পাঁচ লাখ ব্যাগ আটার প্রয়োজন। এছাড়াও গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে দুর্ভিক্ষ এখন পর্যন্ত ১৮৮ জনের মৃত্যু ঘটিয়েছে। তাদের বেশির ভাগই শিশু এবং বয়স্ক। এদিকে, অপুষ্টি এবং ক্ষুধাজনিত অসুস্থতায় ভুগছেন এমন মানুষের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এই সংকটে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সাংবাদিক আহমেদ আবদেল আজিজ বলেন, ‘গাজার পরিস্থিতি অবিশ্বাস্য। ক্ষুধার জ্বালায় মানুষ রাস্তায় পড়ে যাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সহায়তা কেন্দ্রগুলো মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।’ আহমেদকে নিজের পরিবারের খাওয়ানোর জন্য তার একটি মাইক্রোফোন বিক্রি করতে হয়েছিল। কিন্তু সেই টাকা দিয়ে তার পরিবার মাত্র দুদিন খেতে পেরেছিল। সাংবাদিক বশিরের মতো তিনিও এখন নিজের ক্যামেরা বিক্রি করার কথা ভাবছেন। আবদেল বলেন, ‘আমরা কেবল যুদ্ধের নথিভুক্ত করি না- আমরা বেঁচে থাকার জন্য আমাদের সরঞ্জাম বিক্রি করি’।