রয়টার্স, প্রেস টিভি: ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস সতর্ক করে দিয়েছে, আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েল রেডলাইন অতিক্রম করলে তার ফল ভালো হবে না। ইসরায়েলি ধারাবাহিক আক্রমণ এবং বসতি স্থাপনকারীদের অনুপ্রবেশ থেকে পবিত্র স্থানটিকে রক্ষা করার অঙ্গীকার করেছে হামাস। গোষ্ঠীটি বলেছে, যেকোনো মূল্যে তারা আল আকসার পবিত্রতা রক্ষা করবেই।

হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং গোষ্ঠীটির আল-কুদস বিষয়ক কার্যালয়ের প্রধান হারুন নাসের আল-দীন শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানান, পবিত্র স্থানটি ধর্মীয় এবং জাতীয় উভয় ক্ষেত্রেই অগ্রাধিকার পাবে। নাসের আল-দীন বলেন, আল-আকসা একটি রেডলাইন। আমরা মসজিদ এবং জেরুজালেমের বিরুদ্ধে দখলদারদের বিদ্বেষপূর্ণ পরিকল্পনা কার্যকর করতে দেবো না, তাতে যতোই মূল্য চোকাতে হোক না কেন। তিনি ইসরায়েলি দখলদার পুলিশ বাহিনী এবং বসতি স্থাপনকারীদের দ্বারা ফিলিস্তিনি ইবাদতকারীদের আল-আকসার প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া এবং বলপ্রয়োগ এবং ইহুদিকরণ নীতির মাধ্যমে একটি নতুন স্থিতাবস্থা আরোপের প্রচেষ্টার নিন্দা করেছেন। নাসের বলেন, এই আক্রমণগুলি দখলদারদের আল-আকসাকে তার জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করার এবং এর উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আরোপের পদ্ধতিগত পরিকল্পনার অংশ। হামাস কর্মকর্তা ইসরায়েলি নিষেধাজ্ঞা, হয়রানি এবং গ্রেপ্তারের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা সত্ত্বেও আল-আকসা রক্ষার আহ্বানে সাড়া দেয়ায় ফিলিস্তিনিদের দৃঢ়তার প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, তাদের দৃঢ়তা মসজিদ রক্ষার প্রতি অটল অঙ্গীকারের স্পষ্ট বার্তা দেয়। এদিকে হামাস বলেছে, তারা গত শুক্রবার একটি যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত গাজা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ‘ইতিবাচক মনোভাব’ নিয়ে সাড়া দিয়েছে। এই চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য আলোচনায় অংশ নিতে প্রস্তুত তারা। এই প্রস্তাবের আওতায় জিম্মি মুক্তি এবং সংঘাতের অবসান নিয়ে আলোচনা হবে। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে প্রায় ২১ মাস ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধে ‘চূড়ান্ত প্রস্তাব’ হিসেবে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। ট্রাম্প বলেন, তিনি শিগগিরই সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর কাছ থেকে সাড়া আশা করছেন। হামাস তার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে লিখেছে, ‘হামাস আন্দোলন অভ্যন্তরীণ পরামর্শ ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি দল ও গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনার পর মধ্যস্থতাকারীদের সর্বশেষ প্রস্তাব নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে, যার লক্ষ্য আমাদের জনগণের ওপর চলমান আগ্রাসন থামানো।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘হামাস পূর্ণ আন্তরিকতায় এই কাঠামো বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনার নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করতে সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত।’ তবে উভয় পক্ষের মধ্যে চ্যালেঞ্জ এখনও অব্যাহত। হামাসের ঘনিষ্ঠ একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বলেন, ‘মানবিক সহায়তা, মিসরের রাফা সীমান্ত পারাপার এবং ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের সময়সূচি নিয়ে এখনও উদ্বেগ রয়ে গেছে।’ গত মঙ্গলবার ট্রাম্প বলেছিলেন, ইসরায়েল ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য ‘প্রয়োজনীয় শর্তগুলোতে’ সম্মত হয়েছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সোমবার ট্রাম্পের সঙ্গে ওয়াশিংটনে সাক্ষাৎ করবেন। এখনও এই ঘোষণায় প্রকাশ্যে মন্তব্য করেননি। দুই পক্ষের প্রকাশ্য বক্তব্যে এখনও মতপার্থক্য স্পষ্ট। নেতানিয়াহু বারবার বলেছেন, হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ করতে হবে। ইসরায়েলি মিডিয়া জানিয়েছে, ইসরায়েল হামাসের প্রতিক্রিয়া পেয়েছে এবং তারা সেটি পর্যালোচনা করছে। তবে একজন মিশরীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, তারা হামাসের প্রতিক্রিয়া পর্যালোচনা করেছে এবং তারা ‘একটি চুক্তির কাছাকাছি’ রয়েছে ইতিবাচক ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। তবে হামাসের কিছু দাবি নিয়ে এখনও কাজ করা বাকি। ট্রাম্প বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তিনি নেতানিয়াহুর ওপর ‘অত্যন্ত কঠোর’ হবেন। যদিও উল্লেখ করেছেন যে নেতানিয়াহুও একটি চুক্তি চান