এশিয়া
৭৭ ড্রোন ধ্বংস করার দাবি মস্কোর
কুরস্ক থেকে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে তাড়ানোর চূড়ান্ত ধাপে রাশিয়া
কুরস্ক অঞ্চল থেকে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে পুরোপুরি বিদায় করার শেষ ধাপে পৌঁছেছে রাশিয়া। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভের বরাতে গতকাল বৃহস্পতিবার এই দাবি করেছে রুশ বার্তাসংস্থা তাস।
Printed Edition

১৩ মার্চ, তাস, এপি, রয়টার্স : কুরস্ক অঞ্চল থেকে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে পুরোপুরি বিদায় করার শেষ ধাপে পৌঁছেছে রাশিয়া। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভের বরাতে গতকাল বৃহস্পতিবার এই দাবি করেছে রুশ বার্তাসংস্থা তাস। শীর্ষ রুশ সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে সামরিক সাজে সজ্জিত হয়ে গত বুধবার বৈঠক করেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বৈঠকে রাশিয়ার চিফ অব জেনারেল স্টাফ ভ্যালেরি জেরাসিমভ পুতিনকে বলেছেন, কুরস্কের প্রায় ১১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করে নিয়েছিল কিয়েভের সেনারা। তবে প্রায় ৮৬ শতাংশ থেকে তাদের বিদায় করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেছেন, শেষ পাঁচ দিনে প্রায় ২৪টি বসতি ও প্রায় ২৫৯ বর্গকিলোমিটার ভূমি পুনরুদ্ধার করেছে রাশিয়া। এসময় চার শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। গত ৬ আগস্ট রাশিয়ায় অনুপ্রবেশ করে কুরস্ক অঞ্চলের অনেকখানি অংশ দখলে নেয় ইউক্রেন। তাদের আশা ছিল, এদিকে মনোযোগ দিলে অন্যান্য রণক্ষেত্রে রুশ শক্তি হ্রাস পাবে এবং ভবিষ্যতে কোনও সমঝোতায় এই ভূখণ্ড তাদের জন্য তুরুপের তাস হবে। তবে পালটা আক্রমণ চালিয়ে প্রথম থেকেই ধীরে হলেও নিয়মিত কুরস্কে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করতে থাকে রাশিয়া।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে ইউক্রেন ৩০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার পর সমঝোতার বিষয়ে রাশিয়ার অবস্থান জানতে চেয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। তার পরই এই বৈঠকের ডাক দেন পুতিন। যুদ্ধবিরতিতে সম্মত না হলে রাশিয়ার জন্য আর্থিকভাবে তা মারাত্মক ভোগান্তির কারণ হবে বলে হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পুতিন বলেছেন, সামনের দিনগুলোতে আমাদের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে, যতদ্রুত সম্ভব কুরস্ক অঞ্চল শত্রুমুক্ত করা। পাশাপাশি, সীমান্তবর্তী এলাকায় নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার বিষয়টিও আমাদের অবশ্যই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ৭৭টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ড্রোনগুলোর মধ্যে কুরস্ক অঞ্চলে ছয়টি গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। এছাড়াও এই অঞ্চলে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে তাড়িয়ে দেওয়ার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে রুশ সেনারা। এছাড়াও বেলগোরোড, রোস্তভ এবং ব্রায়ানস্কসহ অন্যান্য অঞ্চলেও ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে। ক্রেমলিনের দাবি, কুরস্কে রাশিয়ার অভিযান চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। যে কারণে মার্কিন আলোচকরা এখন মস্কো যাচ্ছেন। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, পশ্চিম রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে বিতাড়িত করার জন্য রাশিয়ার অভিযান চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। এদিকে ইউক্রেনীয় বাহিনী অঞ্চলটির কিছু জায়গা দখল করার পর বুধবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রথমবারের মতো কুরস্ক সফর করেছেন। পুতিনের কুরস্ক সফরের পরপরই কিয়েভ ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সঙ্গে জানানো হয়েছে, ইউক্রেনের সাথে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য আলোচকরা ‘এখনই’ রাশিয়া যাচ্ছেন। পুতিনের সঙ্গে কখন স্থায়ীভাবে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কথা বলবেন; সে প্রসঙ্গে ট্রাম্প কিছু না জানালেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, আমি আশা করি তিনি (পুতিন) যুদ্ধবিরতি করবেন। এখন এটি রাশিয়ার উপর নির্ভর করছে।