ইন্টারনেট: ভারতে আশঙ্কাজনকভাবে কমছে উটের সংখ্যা। ১৯৭৭ সালের গণনার তুলনায় দেশটিতে উটের সংখ্যা ৭৭ শতাংশ কমেছে বলে জানা গেছে। এভাবে চলতে থাকলে পরবর্তী কয়েক দশকে ভারতের মাটিতে উট প্রায় বিলুপ্ত এক প্রাণিতে পরিণত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশটিতে সবচেয়ে বেশি উট রয়েছে রাজস্থানে। তারপর গুজরাট। মূলত ভারতে পাঁচ প্রজাতির উট পাওয়া যায়। থর মরুভূমিতে থাকে বিকানেরি, মেওয়ারি আর জয়সলমেরি উট। গুজরাটে কচ্ছের রন অঞ্চলে পাওয়া যায় কচ্ছি ও খাড়াই প্রজাতি। রনের বাসিন্দা হওয়ায় এরা এবার সাঁতারে খুব পটু। পাঁচ প্রজাতির সংখ্যাই হু হু করে কমছে।
এছাড়াও লাদাখে পাওয়া যায় ব্যাকট্রেন ক্যামেল নামের বিশেষ আরেকটা প্রজাতি। এদের পিঠে দুটো কুঁজ থাকে। এমনিতেই বিপন্ন প্রাণীর তালিকায় থাকা প্রজাতির সদস্য তিনশর নিচে নেমে গেছে। উটের সংখ্যা কমে আসার বড় কারণ হচ্ছে, পশুপালক সম্প্রদায়ের তরুণ প্রজন্ম আর উট পালার পেশায় আগ্রহী নয়। ভারতের গবাদিপশু উন্নয়ন কর্মসূচির মধ্যেও উট নেই। ফলে, পশুটির প্রজনন নিয়ে খামারিদের কাছে কোনও যথাযথ প্রশিক্ষণও পৌঁছায়নি। তবে মন্দের ভাল যে, বিষয়টি নজর এড়ায়নি ভারত সরকারের। উট পালনের আর্থিক সুবিধা নিয়ে পর্যাপ্ত প্রচারণার অভাব রয়েছে। উটের দুধ ভীষণ পুষ্টিকর। প্রাণীটি মাল এবং গাড়ি টানার কাজে যথেষ্ট দক্ষ। ফলে, গ্রামীণ অর্থনীতি আর পর্যটন, দুটো ক্ষেত্রেই মরুভূমির জাহাজ বলে পরিচিত এই প্রাণীটির অবদান ব্যাপক। এছাড়া, ভারতে বিদেশি পর্যটকদের বড় অংশ রাজস্থানে ঘুরতে যান। তাদের আকর্ষণের তালিকায় অন্যতম হচ্ছে মরুভূমির মধ্যে কেল্লা আর উট। গত সেপ্টেম্বরে উট সংরক্ষণে একটি ড্রাফট পলিসি পেপার তৈরি করেছে ভারত সরকারের মৎস্য, পশুপালন ও দুগ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলার পর তৈরি হবে চূড়ান্ত পরিকল্পনা। তারপর সেটা পেশ হবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায়। সেখানে অনুমোদন মিললেই উট বাঁচাতে ভারতে প্রথম শুরু হবে ন্যাশানাল ক্যামেল সাসটেইনিবিলিটি ইনিশিয়েটিভ নামে নতুন প্রকল্প।