রয়টার্স : বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা স্বর্ণবাজারে এক নজিরবিহীন উত্থান ঘটিয়েছে। এ বছর এখন পর্যন্ত স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৫৪ শতাংশ। এর ফলে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রতি আউন্সের মূল্য ৪ হাজার ডলারের সীমা ছুঁয়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা এখনই থামার কোনও লক্ষণ নেই। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা এ খবর জানিয়েছে।
বাজার বিশ্লেষণ সংস্থা এসপি অ্যাঞ্জেলের বিশ্লেষক জন মেয়ার বলেন, স্বর্ণবাজারে এখন প্রজন্মে একবার ঘটে এমন উত্থান দেখা যাচ্ছে।
গত দুই বছরে স্বর্ণের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য শুল্কনীতি, ডলারের অস্বাভাবিক শক্তি, ফেডারেল রিজার্ভের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ, মুদ্রাস্ফীতি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ইউরোপের ধীর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি—সব মিলিয়ে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদ হিসেবে স্বর্ণের দিকে ঝুঁকেছেন।
কমোডিটি মার্কেট অ্যানালিটিকসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড্যান স্মিথ বলেন, এই উত্থান স্বাভাবিক নয়। এটি ইঙ্গিত দিচ্ছে, বিশ্ব অর্থনীতিতে কিছু একটা গুরুতর সমস্যা চলছে।
স্বর্ণের উত্থানের প্রভাবে রুপা, প্লাটিনাম ও প্যালাডিয়ামের দামও বাড়ছে। ১৯৭৯ সালের তেল সংকটের পর এটি স্বর্ণের সর্বোচ্চ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হতে যাচ্ছে।
বিশ্বজুড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ কিনছে। মেটালস ফোকাস–এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সাল থেকে প্রতিবছর এক হাজার মেট্রিক টনের বেশি স্বর্ণ কিনছে তারা। চলতি বছরও ৯০০ টন ক্রয়ের সম্ভাবনা রয়েছে, যা ২০১৬–২০২১ সালের গড়ের দ্বিগুণ।
অন্যদিকে, ঋণসুবিধা কম রাখা এবং সুদের হার বৃদ্ধিতে বিলম্ব করায় বিনিয়োগকারীরা সঞ্চয় বা শেয়ারবাজারের চেয়ে স্বর্ণে বিনিয়োগকে নিরাপদ মনে করছেন।