রয়টার্স, এক্সে : গাজা থেকে ফিলিস্তিনীদের লিবিয়ায় পুনর্বাসনের কোনও পরিকল্পনা নেই বলে দাবি করেছে লিবিয়ায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এই কথা বলা হয়। গত বৃহস্পতিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, গাজা থেকে প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনীকে স্থায়ীভাবে লিবিয়ায় পুনর্বাসনের পরিকল্পনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। বিনিময়ে লিবিয়ায় আটকে রাখা কয়েক বিলিয়ন ডলারের তহবিল ছাড় দেওয়ার কথা ভাবছে ওয়াশিংটন। পুরো পরিকল্পনা সম্পর্কে অবগত এবং নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাঁচ কর্মকর্তার বরাতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। অবশ্য এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি এবং ইসরাইলকেও আলোচনা সম্পর্কে অবগত রাখা হয়েছে বলে দাবি করা হয়। তবে এনবিসির দাবিকে অস্বীকার করে মার্কিন দূতাবাস বলেছে, গাজাবাসীদের লিবিয়ায় পুনর্বাসনের কথিত পরিকল্পনার দাবি মোটেও সত্য নয়। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ত্রিপলি ভিত্তিক কর্তৃপক্ষ, জাতীয় ঐক্যের সরকারের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এনবিসি তাদের প্রতিবেদন তৈরির আগে, একাধিকবার অনুরোধ সত্ত্বেও তাদের কাছে কোনও বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ। তবে প্রতিবেদন প্রকাশের পর এক মার্কিন কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, এনবিসির প্রতিবেদনের দাবিগুলো মোটেই সত্য নয়। তিনি বলেছেন, এ ধরনের কোনও পরিকল্পনা কার্যকর করার পরিস্থিতি নেই। বাস্তবতা ভিন্ন। এমন অর্থহীন কোনও পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়নি।

প্রতিবেদনের বিষয়ে হামাসের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাসেম নাইম বলেছেন, ফিলিস্তিনীদের লিবিয়ায় পুনর্বাসনের কোনও পরিকল্পনার বিষয়ে তারা অবগত নন। গাজাবাসীদের পুনর্বাসন নিয়ে বক্তব্য দিতে এনবিসির অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরাইলী সরকার। এদিকে, লিবিয়া নিজ দেশের নাগরিকদেরই পর্যাপ্ত সেবা দিতে পারছে না। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ দেবেইবাহ এবং পূর্বাঞ্চলে খলিফা হাফতারের নেতৃত্বাধীন দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী সরকার সশস্ত্র সংঘর্ষে লিপ্ত।

দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার কিছুদিন পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বিস্ফোরক প্রস্তাবে বলেন, ফিলিস্তিনীদের অন্য কোথাও পুনর্বাসন করে গাজা উপত্যকার দখল নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। আর গাজাকে গড়ে তুলতে চান মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা হিসেবে। আরেক প্রস্তাবে তিনি মিশর ও জর্ডানকে ফিলিস্তিনীদের গ্রহণ করতে বলেছিলেন, যা দুই দেশই প্রত্যাখ্যান করে। এসব পরিকল্পনা ফিলিস্তিনীরা ১৯৪৮ সালের ‘নাকবা’ বা ‘বিপর্যয়ের’ পুনরাবৃত্তি হিসেবে বিবেচনা করে। ইসরাইল প্রতিষ্ঠার সময় লক্ষাধিক ফিলিস্তিনী নাকবার সময় বাস্তুচ্যুত হন। এপ্রিলে ট্রাম্প পরামর্শ দেন, ফিলিস্তিনীদের অন্য দেশে পাঠানো যেতে পারে।

অনেক দেশই তা করতে রাজি হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। চলতি সপ্তাহে কাতার সফরের সময় আবারও গাজা দখলের খায়েশ প্রকাশ করে ট্রাম্প বলেন, উপত্যকাটিকে তিনি স্বাধীন অঞ্চল হিসেবে গড়ে তুলতে চান। সেখানে রক্ষা করার মতো কিছু আর অবশিষ্ট নেই।