আল-জাজিরা : দখলদার ইসরাইলের সম্পূর্ণ অবরোধে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৭ জনে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, খাদ্য, পানি ও ওষুধবাহী সহায়তা ট্রাকগুলো সীমান্তে আটকে আছে। ইসরাইলের বাধার কারণে সেগুলো গাজায় প্রবেশ করতে পারছে না।

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা অবাধ প্রবেশ নিশ্চিত করতে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা জোরালো আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলছেন, খাদ্য ও ওষুধ সংকট চরমে পৌঁছেছে এবং অনাহারে মৃত্যুর ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করেছে। এদিকে, ফিলিস্তিনের চিকিৎসা ও বেসামরিক প্রতিরক্ষা সূত্র জানিয়েছে, শনিবার ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলি হামলায় একদিনে কমপক্ষে আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যমতে, চলমান যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে কমপক্ষে ৫২ হাজার ৪৯৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১৮ হাজার ৩৬৬ জন আহত হয়েছেন। তবে গাজা গভর্নমেন্ট মিডিয়া অফিস বলছে, বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন এবং তাদের মৃত ঘোষণা করা হয়েছে, ফলে মোট মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে।

গাজায় সুড়ঙ্গ বিস্ফোরণে ইসরাইলের ৭ সেনা হতাহত

দক্ষিণ গাজার রাফাহ অঞ্চলের একটি ফাঁদপাতা সুড়ঙ্গে বিস্ফোরণে দুই ইসরাইলি সেনা নিহত এবং আরও দুজন আহত হয়েছেন বলে শনিবার জানিয়েছে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

গতকাল রোববার টাইমস অব ইসরাইলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

নিহত দুই সেনা হলেন অধিনায়ক (ক্যাপ্টেন) নোয়াম রাভিদ (২৩) এবং স্টাফ সার্জেন্ট ইয়ালি সেরর (২০)। উভয়েই ইসরাইলি সেনাবাহিনীর অভিজাত ইয়াহালোম যুদ্ধ প্রকৌশল ইউনিটে কর্মরত ছিলেন।

আইডিএফের প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, ইয়াহালোম ইউনিটের সদস্যরা গোলানি ব্রিগেডের অধীনে একটি ভবনের ভেতরের সুড়ঙ্গের মুখ পরীক্ষা করছিলেন। তখন হঠাৎ একটি বিস্ফোরণে তারা আক্রান্ত হন।

এ ঘটনায় গাজায় হামাসবিরোধী স্থল অভিযানে এবং সীমান্ত বরাবর চলমান সামরিক অভিযানে ইসরাইলের মোট নিহতের সংখ্যা ৪১৬-তে পৌঁছেছে।

ইয়েমেনি ক্ষেপণাস্ত্রে কেঁপে উঠল তেল আবিব

পার্সটুডে : ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারিয়ি ইসরাইলের রাজধানী তেল আবিবে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা অব্যাহতের ঘোষণা দিয়েছেন।

গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি জানান, ফিলিস্তিনের নির্যাতিত জনগণের প্রতি সমর্থন ও গাজায় মার্কিন-সমর্থিত ইসরাইলি গণহত্যার প্রতিবাদে ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী অধিকৃত ইয়াফা (তেল আবিব) এলাকার একটি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে সফল ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।

তিনি বলেন, এই অভিযানে ‘ফিলিস্তিন-২’ হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, যা ইসরাইলের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভেদ করে সফলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে।

ইয়াহিয়া সারিয়ি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, সমগ্র মুসলিম উম্মাহ নীরবতা ও নিষ্ক্রিয়তার পরিণতি ভোগ করবে। গাজায় যা ঘটছে, তার প্রভাব আগে বা পরে অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়বে। শত্রু তার আগ্রাসন বিস্তৃত করবেই। তাই সকলের উচিত নিরাপত্তার জন্য, হুমকি আসার আগেই গাজাকে সমর্থন করা।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, গাজায় আগ্রাসন ও অবরোধ অবসান না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।

শনিবার ভোরে ইসরাইলি গণমাধ্যমগুলো জানায়, ইয়েমেন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পর ইসরাইলের ১০০টিরও বেশি এলাকায় সাইরেন বেজে ওঠে। জেরুজালেম, তেল আবিব ও নেগেভ অঞ্চলে সতর্কতামূলক সাইরেন বাজানো হয় এবং ইসরাইলি সেনাবাহিনী ইয়েমেনি ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবিলায় তৎপর হয়ে ওঠে।

ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ আন্দোলন সমর্থিক সশস্ত্র বাহিনী গত কয়েক মাস ধরে ইসরাইলি জাহাজ ও ইসরাইল-সমর্থক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে আসছে। এই হামলা ইঙ্গ-মার্কিন বাহিনী ও ইসরাইলের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।