এনডিটিভি : এই উদ্যোগে কাজ করছিল ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি) কানপুর। ভারতের কেন্দ্রীয় রাজধানী দিল্লিতে বায়ুদূষণ কমাতে কৃত্রিমভাবে বৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে উদ্যোগটি ভেস্তে গেছে। কোনো বৃষ্টি হয়নি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর থেকে এই তথ্য জানা গেছে। গত মঙ্গলবার দিল্লির আকাশে কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি ঘটানোর উদ্দেশ্যে ক্লাউড সিডিংয়ের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তা ‘পুরোপুরি সফল হয়নি’। কারণ, সেদিন মেঘে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল খুবই কম। ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে আইআইটি কানপুরের পরিচালক মণীন্দ্র আগরওয়াল বলেন, এই প্রক্রিয়া কোনো জাদুকরি সমাধান নয়, বরং দূষণ মোকাবিলায় এক ধরনের জরুরি বা অস্থায়ী উদ্যোগ। এনডিটিভিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে আগরওয়াল বলেন, দিল্লি সরকারের সহযোগিতায় তাঁদের প্রতিষ্ঠান এই পরীক্ষা চালাচ্ছে। বুধবার আবারও চেষ্টা করা হবে এবং তখন ফলাফল আরও ভালো হবে বলে তাঁরা আশা করছেন। তিনি জানান, মেঘে বৃষ্টি ঘটাতে যে মিশ্রণ ব্যবহার করা হয়েছে, তার ২০ শতাংশ সিলভার আয়োডাইড, বাকি অংশে রয়েছে রক সল্ট ও সাধারণ লবণের সংমিশ্রণ। মঙ্গলবার মোট ১৪টি ফ্লেয়ার ছোড়া হয়েছে; কিন্তু বৃষ্টি হয়নি।
আগরওয়াল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো বৃষ্টি হয়নি। সে অর্থে এটি সম্পূর্ণ সফল বলা যাবে না। আজকের মেঘে আর্দ্রতা মাত্র ১৫-২০ শতাংশের মধ্যে ছিল। এত কম আর্দ্রতায় বৃষ্টি ঘটানোর সম্ভাবনা স্বাভাবিকভাবেই খুব কম। তবে এই পরীক্ষা আমাদের দলকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছে যে আমরা এই প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে পারি।’ আগরওয়াল আরও বলেন, ‘আজকের বৃষ্টি নিয়ে পূর্বাভাসগুলো পরস্পরবিরোধী ছিল। কেউ বলেছেন বৃষ্টি হবে, কেউ বলেছেন হবে না। আমাদের দল যে এলাকায় ক্লাউড সিডিংয়ের কাজ করেছে, সেখানে মেঘের আর্দ্রতা ছিল খুব কম। তাই আজ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললে চলে।’ তিনি জানিয়েছেন, বুধবার আরও দুটি ফ্লাইট থেকে একইভাবে পরীক্ষা চালানো হবে এবং মেঘের উপস্থিতি থাকলে এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। দিল্লির স্থায়ী দূষণ সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান কি এই ক্লাউড সিডিং হতে পারে—এ প্রশ্নের জবাবে আইআইটি পরিচালক স্পষ্টভাবে বলেন, ‘না।’ তিনি বলেন, ‘এটি এক ধরনের জরুরি সমাধান। অর্থাৎ যখন দূষণের মাত্রা ভয়াবহ রকম বেড়ে যায়, তখন সাময়িকভাবে দূষণ কমানোর জন্য এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে স্থায়ী সমাধান হলো দূষণের উৎস নিয়ন্ত্রণ করা। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত এমন এক সময়ের দিকে যাওয়া, যখন ক্লাউড সিডিংয়ের প্রয়োজনই থাকবে না, কারণ বাতাস তখন পরিষ্কার থাকবে। কিন্তু তত দিন পর্যন্ত এটি একটি সম্ভাব্য হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগতে পারে।’