DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

এশিয়া

গাজা থেকে লুট করা জিনিস সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিক্রি করছে ইসরাইলী সেনারা

ফিলিস্তিনের গাজা এবং লেবাননের বিভিন্ন বাড়ি থেকে চুরি করা মূল্যবান জিনিসপত্র বিক্রির জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছে ইসরাইলী সৈন্যরা। হিব্রু ভাষার সংবাদপত্র হামাকোম হাচিম বেগেহিনম (নরকের সবচেয়ে উষ্ণ স্থান)-এর এক অনুসন্ধানে এমনটা উঠে এসেছে।

Printed Edition
q

৮ মার্চ, নডিটিভি, টিআরটি গ্লোবাল: ফিলিস্তিনের গাজা এবং লেবাননের বিভিন্ন বাড়ি থেকে চুরি করা মূল্যবান জিনিসপত্র বিক্রির জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছে ইসরাইলী সৈন্যরা। হিব্রু ভাষার সংবাদপত্র হামাকোম হাচিম বেগেহিনম (নরকের সবচেয়ে উষ্ণ স্থান)-এর এক অনুসন্ধানে এমনটা উঠে এসেছে।

তুর্কিভিত্তিক টিআরটি গ্লোবাল জানিয়েছে, ইসরাইলী সৈন্য এবং কমান্ডারদের কিছু ‘সাক্ষ্য’ উদ্ধৃত করা হয়েছে গত ৪ মার্চ প্রকাশিত প্রতিবেদনে। তারা অবরুদ্ধ গাজায় লুটপাট প্রত্যক্ষ করার বিশদ বিবরণ দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, তারা ‘এত লুটপাট দেখেছেন যে, এটি তাদের আর অবাক করে না।‘

হামাকোম হাচিম বেগেহিনম সংবাদপত্রের মতে, চুরি করা জিনিসপত্রের মধ্যে রয়েছে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ এবং মূল্যবান গয়না। এছাড়া কম্পিউটার, স্মার্টফোন, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, আসবাবপত্র, পোশাক এবং প্রসাধনীও লুট করা হয়েছে। কেফিয়া, গালিচা এবং তসবিহ পুঁতি পর্যন্ত নিয়ে যায় ইসরাইলী সৈন্যরা।

পরবর্তীতে তারা লুট করা জিনিসপত্র বিক্রির জন্য ফেসবুক মার্কেটপ্লেসসহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে। তবে বেশিরভাগ লেনদেন ব্যক্তিগত টেলিগ্রাম গ্রুপগুলোতে হয়, যেগুলো শুধুমাত্র আমন্ত্রণের মাধ্যমে অ্যাক্সেসযোগ্য। কঠোর যাচাই-বাছাইয়ের পর লোকেদের গ্রুপগুলোতে নেওয়া হয়। এগুলো সেইসব গ্রুপের মতো, যেখানে মাদক এবং অস্ত্র ব্যবসা করা হয়।

নাহাল ব্রিগেডের একজন সৈনিকের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্লাটুন কমান্ডার এবং আমি সৈন্যদের ব্যাগগুলো দেখতাম, তারা কী চুরি করেছে তা দেখার জন্য। সেখানে কেফিয়া, গালিচা - যা কিছু পারে প্রত্যেকেই কিছু না কিছু নিয়ে যেত।

আরেকজন ইসরাইলী সৈনিক সংবাদপত্রটিকে বলেন, ‘আমরা কেবল অস্ত্র খোঁজার জন্য অভিযানে নামতাম, আর লোকেরা উন্মত্তভাবে প্রার্থনার পুঁতি খুঁজছিল। তারা সেগুলো সংগ্রহ করত, তুলনা করত...। একজন লোক প্রার্থনার পুঁতি খুঁজে বের করার জন্য বাচ্চাদের ঘরও তছনচ করতো।‘ প্রাথমিকভাবে চুরি যাওয়া জিনিসপত্রের জন্য সৈন্যদের ব্যাগ পরীক্ষা করার সিদ্ধান্তটি সৈনিক এবং তার প্লাটুন কমান্ডারের একটি স্বাধীন প্রচেষ্টা ছিল। ইসরাইলী সৈনিক বলছিলেন, সৈন্যদের খাদ্য ও অস্ত্র সরবরাহ বিতরণে নিযুক্ত কর্মকর্তারা গাজা থেকে চুরি হওয়া আসবাবপত্র এবং গৃহস্থালীর জিনিসপত্র নিজেদের ট্রাক দিয়ে সামরিক ইউনিটে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তারা ট্রাক থেকে খাবার এবং গোলাবারুদ নামিয়ে সোফা এবং আসবাবপত্র লোড করত।‘

সেনা সদস্য বলেন, লুটপাট এতটাই সাধারণ হয়ে উঠেছিল যে, ‘একজন সিনিয়র কমান্ডারও গাজার মানুষের বাড়ি থেকে সরঞ্জাম লুট করছেন। ডেপুটি ব্যাটালিয়ন কমান্ডার এবং ব্যাটালিয়ন কমান্ডারের সম্পূর্ণ সজ্ঞানের সাথে এগুলো করেছেন।‘

যখন তিনি তার ডেপুটি কমান্ডারের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেন, তখন তাকে বলা হয়, ‘যদিও এটি খারাপ দেখাচ্ছে, এটি সম্পর্কে তার কিছুই করার ছিল না।‘ লুটপাট, লুণ্ঠন আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের লঙ্ঘন বলে বিবেচিত হয়। ইসরাইলী আইনও লুটপাট নিষিদ্ধ করেছে। তবুও প্রায়শই তাদের সামরিক বিচার ব্যবস্থা সৈন্যদের জবাবদিহি করতে ব্যর্থ হয়। ভারতে ঘুরতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার ইসরাইলী নারী ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক ইসরাইলী নারী পর্যটক। একই সময় ইসরাইলী নারীকে আশ্রয় দেয়া বাড়ির মালিকও ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কর্ণাটকের কোপ্পালের একটি খালের কাছে এই গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় পুলিশের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৭ বছর বয়সি ইসরাইলী পর্যটক ও ২৯ বছর বয়সি স্থানীয় নারী তুঙ্গভদ্রা খালের পাশে তারা দেখছিলেন। এ সময় তিনজন পুরুষ এসে তাদের ধর্ষণ করে। ধর্ষণের শিকার হওয়া নারীদের সঙ্গে আরও তিনজন পর্যটক ছিলেন। তাদের একজন ড্যানিয়েল যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এবং বাকি দু’জন যথাক্রমে মহারাষ্ট্র ও ওডিশার বাসিন্দা। তারা খালে পড়ে গেলেও গুরুতর আহত হননি। কোপ্পালের পুলিশ সুপারিন্টেন্ডেন্ট রাম এল আরাসিড্ডি জানান, ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের শিগগিরই গ্রেফতার করা হবে। এ ঘটনায় দুটি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। ওই বাড়ির মালিক ও তার চার অতিথি রাতের খাবারের পর খালের পাড়ে তারা দেখতে গিয়েছিলেন। এমন সময় তিন অভিযুক্ত একটি মোটরসাইকেলে করে সেখানে আসে। প্রথমে তারা পেট্রল কোথায় পাওয়া যাবে-তা জানতে চায় এবং পরে ইসরাইলী নারীর কাছ থেকে ১০০ রুপি দাবি করে।

ইসরাইলী পর্যটক টাকা দিতে অস্বীকার করলে অভিযুক্তদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। এরপর অভিযুক্তরা ভ্রমণকারীদের ওপর হামলা চালায় এবং তার তিন পুরুষ পর্যটককে ধাক্কা দিয়ে খালে ফেলে দেয়। পরে তারা দুই নারীকে ধর্ষণ করে এবং মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়। স্থানীয় ওই নারীর মালিকের দেয়া অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ধর্ষণ ও ডাকাতির অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছে।