রয়টার্স : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হামাসকে তিন থেকে চার দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত গাজা শান্তি পরিকল্পনা মেনে নেওয়ার জন্য। পরিকল্পনাটি প্রত্যাখ্যান করলে খুবই দুঃখজনক পরিণতি হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। এতে করে হামাসের ওপর প্রস্তাবটি মেনে নেওয়ার জন্য চাপ বাড়ছে। ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ইসরায়েল ও আরব নেতারা ইতোমধ্যেই এই পরিকল্পনাকে সমর্থন করেছেন। এখন আমরা শুধু হামাসের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। হামাস যদি না মানে, তাহলে এর পরিণতি হবে অত্যন্ত দুঃখজনক। আলোচনার আর বেশি সুযোগ নেই। ২০ দফার এই প্রস্তাবে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি, হামাসের হাতে থাকা সব জিম্মির বিনিময়ে ইসরায়েলে আটক ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি, ধাপে ধাপে ইসরায়েলের গাজা থেকে প্রত্যাহার, হামাসের নিরস্ত্রীকরণ এবং আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে একটি অন্তর্র্বতীকালীন প্রশাসন গঠনের কথা বলা হয়েছে। তবে হামাস আগে থেকেই নিরস্ত্রীকরণের শর্ত প্রত্যাখ্যান করে আসছে। একজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বলেন, ট্রাম্পের পরিকল্পনা মূলত ইসরায়েলের শর্তগুলোর পূর্ণ অনুকরণ। এতে গাজার বাসিন্দাদের কোনও বৈধ অধিকার স্বীকৃতি পায়নি। হামাসের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, প্রস্তাবটি ইসরায়েলপন্থি এবং অসম্ভব শর্তযুক্ত হলেও দলটি তা খতিয়ে দেখে প্রতিক্রিয়া দেবে। এরই মধ্যে সৌদি আরব, জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার ও মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মঙ্গলবার দোহায় কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনায় যোগ দেবে তুরস্কের গোয়েন্দা প্রধানও। তবে হামাস প্রতিনিধি এতে অংশ নেবেন কি না তা স্পষ্ট নয়। হোয়াইট হাউজ সূত্র জানিয়েছে, গত ৯ সেপ্টেম্বর দোহায় হামাস নেতাদের বৈঠকের সময় ইসরায়েলের ব্যর্থ হামলার জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কাতারের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। যদিও ট্রাম্পের পাশে দাঁড়িয়ে পরিকল্পনায় সমর্থন জানালেও পরে নেতানিয়াহু কিছু ধারা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, বিশেষ করে সম্ভাব্য ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের প্রসঙ্গে। গাজার ভেতরে কিছু বাসিন্দা শান্তি প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন। গাজা নগরের বাসিন্দা সালাহ আবু আমর (৬০) বলেন, আমরা যুদ্ধের অবসান চাই, কিন্তু সেই সেনারা যারা আমাদের লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে, তারা চলে যাক—আমরা সেটাই চাই। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৬৬ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। ইসরায়েল বলছে, তাদের অভিযানের লক্ষ্য হামাসকে পুরোপুরি ধ্বংস করা। মঙ্গলবার ইসরায়েলি সেনারা গাজা নগরের কেন্দ্রে পৌঁছেছে, যা নেতানিয়াহুর ভাষায় হামাসের শেষ ঘাঁটি। এছাড়া ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান গাজা নগরের ওপর থেকে নতুন লিফলেট ফেলেছে, যাতে বাসিন্দাদের অবিলম্বে দক্ষিণ দিকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লিফলেটে লাল অক্ষরে লেখা ছিল, হামাসবিরোধী চূড়ান্ত যুদ্ধ এবং হামাস ধ্বংস না হলে এটি থামবে না।