ফিলিস্তিনের গাজায় এখনো নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। অবরুদ্ধ উপত্যকায় ইসরাইলী বাহিনীর টানা হামলায় প্রতিদিনই বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। হামলায় নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৯৪ জন ফিলিস্তিনী। ২৫২ জনের বেশি আহত হয়েছেন। এই নিয়ে গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা প্রায় ৫৮ হাজার ৬০০ জনে পৌঁছেছে। এদিকে, ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালগুলোতে নতুন করে ৯৪ জনের লাশ আনা হয়েছে। এই সময়ে আহত হয়েছেন আরও ২৫২ জন। এখন পর্যন্ত মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬০৭ জনে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, অনেক লাশ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে কিংবা রাস্তায় পড়ে রয়েছে, যাদের উদ্ধারে পৌঁছাতে পারছেন না উদ্ধারকর্মীরা। এই লাশগুলো গুনেও রাখা সম্ভব হচ্ছে না যুদ্ধকালীন মানবিক বিপর্যয়ের কারণে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে ইসরাইলী বাহিনীর হামলায় আরও সাতজন ফিলিস্তিনী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩০ জনের বেশি। চলতি বছরের ২৭ মে থেকে এ পর্যন্ত সহায়তা নিতে গিয়ে হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৮৫১ জন এবং অন্তত ৫ হাজার ৬৩৪ জন আহত হয়েছেন।
প্রতিদিন মারা যাচ্ছে ২৮ জন: জাতিসংঘ শিশু সংস্থা ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল জানিয়েছেন, গাজায় চলমান সংঘাতে এখন পর্যন্ত ১৭ হাজারের বেশি শিশু নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে ৩৩ হাজারের বেশি। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি জানান, গড়ে প্রতিদিন ২৮টি শিশু গাজায় নিহত হচ্ছে। অর্থাৎ প্রায় প্রতিদিন একটি শ্রেণিকক্ষের সমান শিশু প্রাণ হারাচ্ছে, যা চলেছে প্রায় দুই বছর ধরে। তিনি আরও জানান, অপুষ্টির হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। শুধু জুন মাসেই প্রায় ৬ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়েছে। যা ফেব্রুয়ারি মাসের তুলনায় ১৮০ শতাংশ বেশি। জাতিসংঘের আন্ডারসেক্রেটারি-জেনারেল টম ফ্লেচার জানান, গাজায় খাদ্য সরবরাহ প্রায় শেষ পর্যায়ে। মানুষ যখন খাবারের সন্ধানে বের হচ্ছে, তখন তাদের গুলী করা হচ্ছে।