দি নিউ আরব, আনাদোলু : ইসরাইল গাজা উপত্যকায় মানুষের জীবনকে অসম্ভব করে তোলার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদেলমাজিদ তেববুনে। তবে তিনি এও বলেছেন, ইসরাইলের আগ্রাসন কোনোভাবেই ফিলিস্তিনকে মুছে ফেলতে পারবে না। আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্সে আগামীকাল অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিনি সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্টের বার্তা পড়ে শোনান দেশটির মুজাহিদিন ও অধিকারভোগীদের মন্ত্রী আবদেলমালেক তাশেরিফত। বার্তায় তেববুনে বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলের চলমান আগ্রাসন আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার আইনের মৌলিক নীতিমালা স্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করছে।’ তিনি আরও জানান, গাজায় জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলার পাশাপাশি ইসরাইল পশ্চিম তীর ও জেরুজালেমে ফিলিস্তিনি ভূমি দখল করছে। তেববুনে বলেন, ‘ইসরাইলের অব্যাহত আগ্রাসন ফিলিস্তিনকে মুছে দিতে পারবে না।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘ইসরাইল এটি করতে চায় গাজার অবকাঠামো ধ্বংস করে, স্বাস্থ্যব্যবস্থা টার্গেট করে, অবরোধ ও খাদ্যসংকট চাপিয়ে দিয়ে, আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে এবং হামলা চালিয়ে।’ ইসরাইলকে আন্তর্জাতিক আইন মানাতে বাধ্য করতে, গাজার অবরোধ সম্পূর্ণভাবে তুলে নিতে এবং সব সীমান্ত পথ খুলে দিয়ে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তেববুনে আবারও আলজেরিয়ার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘অধিকৃত ফিলিস্তিনের ভাইদের প্রতি আলজেরিয়ার সমর্থন অব্যাহত থাকবে। তারা পূর্ণ সার্বভৌমত্ব ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত এবং জেরুজালেম রাজধানী করে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আলজেরিয়া সব রকম সহায়তা দিতে প্রস্তুত।’
এদিকে গাজার রাফাতে সুড়ঙ্গে আটকে পড়েছেন যোদ্ধারা। তাদের নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। গত বুধবার এ আহ্বান জানায় তারা। গত মাসে হামাস ও দখলদার ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হলেও রাফার সুড়ঙ্গে প্রায় ১০০ থেকে ২০০ যোদ্ধা আটকে পড়েন। এরমধ্যে কিছু যোদ্ধা বের হওয়ার চেষ্টা করেন। তাদের মধ্যে অন্তত ২০ জনকে বিমান হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে ইসরাইলি সেনারা। এরপরই হামাস এ আহ্বান জানাল। হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমাদের যোদ্ধাদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য আমরা ইসরাইলকে দায়ী করছি। আমাদের সন্তানরা যেন বাড়িতে ফিরতে পারে সে ব্যবস্থা করতে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছি।”
যুদ্ধবিরতির পরও রাফার প্রায় পুরো অংশ ইসরাইলিদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেখানে তারা কথিত হলুদ সীমারেখা তৈরি করেছে। কোনও চিহ্ন না থাকলেও কাল্পনিক এ সীমারেখা পার হলেই ফিলিস্তিনিদের নির্বিচারে গুলি বা বিমান হামলা চালিয়ে হত্যা করে ইসরাইল।
এদিকে মধ্যস্থতাকারীরা হামাসের এসব যোদ্ধাকে নিরাপদ প্রস্থান দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এটির বিরোধিতা করছেন। এ দখলদার দাবি করেছেন, হামাসের যোদ্ধাদের তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে। তবে হামাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে তারা কখনও ইসরাইলিদের কাছে আত্মসমর্পণ করবে না।