মেহের নিউজ: হুথি আনসারুল্লাহ নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর প্রবল হামলার মুখে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান অবশেষে লোহিত সাগর থেকে সরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে এক হামলা থেকে বাঁচতে গিয়ে ওই রণতরী থেকে ৬৭ কোটি ডলার মূল্যের একটি যুদ্ধবিমান সাগরে পড়ে যায়। এছাড়াও ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনীর ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষিতর মুখে পড়ার পর মার্কিন বাহিনী পিছু হটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। গত মঙ্গলবার ইয়েমেনের আল-মাসিরাহ টেলিভিশন দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রের বরাতে জানায়, ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান রণতরী ও এর সঙ্গে থাকা যুদ্ধজাহাজগুলো শিগগিরই লোহিত সাগর অঞ্চল ত্যাগ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইয়েমেনি সূত্রটির দাবি, ‘আমরা ট্রুম্যান রণতরীতে সরাসরি আঘাত হানার খবরটি নাকচ করছি না। আমরা যে কোনো মুহূর্তে এটিকে লোহিত সাগর এলাকা ত্যাগ করতে দেখতে পারি’।
এদিকে ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী সোমবার একটি হামলার দায় স্বীকার করে জানায়, হামলাটি ছিল মার্কিন হামলায় বেসামরিক হতাহতের জবাব। তারা জানায়, নৌ, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনীর সমন্বয়ে পরিচালিত যৌথ অভিযানে ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান এবং এর সঙ্গে থাকা যুদ্ধজাহাজগুলো ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এর ফলে রণতরী ট্রুম্যান উত্তরদিকে সরে যেতে বাধ্য হয়। এদিকে আরেকটি হামলার ঘটনা থেকে বাঁচতে গিয়ে ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান থেকে একটি এফ/এ-১৮ই সুপার হর্নেট যুদ্ধবিমান লোহিত সাগরে পড়ে যায়।
জানা গেছে, রণতরীটি আসন্ন হামলা এড়াতে হঠাৎ কৌশলগত মোড় নিলে হ্যাঙ্গার ডেকে ল্যাড করা যুদ্ধবিমানটি এবং একে টেনে নিয়ে যাওয়া একটি ট্রাক- উভয়ই জাহাজ থেকে সাগরে পড়ে ডুবে যায়। বিশ্লেষকদের দাবি, ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান যদি লোহিত সাগর অঞ্চল ছেড়ে গেলে তা প্রথম কোনো ঘটনা হবে না। কেননা, এর আগেও একাধিক মার্কিন রণতরী ইয়েমেনি পাল্টা হামলার কারণে এই অঞ্চল থেকে পালিয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র মূলত ইয়েমেনি আক্রমণ ঠেকাতে ও ইসরাইল-সমর্থিত লক্ষ্যবস্তুগুলো রক্ষায় গত মাস থেকে আক্রমণাত্মক সামরিক পদক্ষেপ বাড়ায়। তবে ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, যতদিন পর্যন্ত গাজায় গণহত্যা ও অবরোধ চলবে এবং ইয়েমেনে মার্কিন হামলা বন্ধ না হবে, ততদিন তাদের হামলাও অব্যাহত থাকবে। বিশেষ করে লোহিত সাগর ও আরব সাগরে মার্কিন সামরিক লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধে।