আল-জাজিরা,প্রেস টিভি : ফিলিস্তিনের গাজা সীমানায় বড় একটি সামরিক ঘাঁটি বানানোর পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরাইলি অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম শরিম জানিয়েছে, এই ঘাঁটি নির্মাণে প্রায় ৫০ কোটি ডলার খরচ হতে পারে। ঘাঁটিটিতে হাজারের বেশি সেনা ও ভারী অস্ত্র রাখতে চায় মার্কিন সরকার। শরিমের বরাতে এমন খবর জানিয়েছে ইরানি গণমাধ্যম । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটি বানানোর সিদ্ধান্তে উদ্বেগ দেখা গেছে মধ্যপ্রাচ্যে। অনেকের ধারণা, ইসরাইলকে সাহায্য করে যুক্তরাষ্ট্রের এটি নতুন আগ্রাসনের ইঙ্গিত।
ইসরাইলি গণমাধ্যমটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আমেরিকার তৈরি এই ঘাঁটি ওয়াশিংটনকে ইসরাইলের সরাসরি সমন্বয় ছাড়াই কাজ করার ক্ষমতা দেবে। পরিস্থিতি নিজেদের মতো গঠন করার সুযোগ তৈরি করবে খোদ আমেরিকা। গত সপ্তাহে ইসরাইলের সেনাবাহিনীর সঙ্গে আমেরিকার একটি প্রতিনিধি দল সম্ভাব্য স্থান নিয়েও আলোচনা করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, ইসরাইলের গাজায় চলমান গণহত্যামূলক যুদ্ধ নিয়ে বৈশ্বিক ক্ষোভ যখন তীব্র হচ্ছে, তখন এই পরিকল্পনা প্রকাশ্যে এসেছে। তাদের মতে, ইসরাইল হয়তো সাময়িকভাবে আন্তর্জাতিক চাপ কমাতে তার মিত্রদের মাধ্যমে নিজের লক্ষ্য পূরণের চেষ্টা করছে। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা এই বিষয়ে সতর্ক করেছেন, এই ধরনের পদক্ষেপ এক দখলদারিত্বকে অন্য দখলদারিত্ব দিয়ে প্রতিস্থাপন করার প্রচেষ্টা মাত্র। অর্থাৎ, ইসরাইলি সেনাদের জায়গায় বিদেশি সৈন্যদের বসানো।
নভেম্বরের শুরুতে গাজার হামাস আন্দোলনের সিনিয়র নেতা মুসা আবু মারজুক কে বলেছেন, ‘আমরা এমন কোনো সামরিক বাহিনী মেনে নিতে পারি না, যা গাজায় দখলদার সেনাবাহিনীর বিকল্প হিসেবে কাজ করবে।’ এর আগে, ওয়াশিংটন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি খসড়া প্রস্তাব এনেছিল, যেখানে ‘ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্স (ওঝঋ)’ নামে একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনের কথা বলা হয়। এই বাহিনী যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, কাতার ও মিশরের নেতৃত্বে গঠিত হওয়ার কথা। সেখানে বলা হয়, এই বাহিনী অন্তত দুই বছর গাজায় অবস্থান করবে। পুনর্গঠন ও নিরাপত্তার অজুহাতে মূলত গাজাকে ‘অস্ত্রহীন’ করা ও প্রতিরোধ আন্দোলনের কাঠামো ভেঙে ফেলার লক্ষ্যেই। সমালোচকদের মতে, এই পরিকল্পনা আসল সমস্যাগুলো—যেমন ইসরাইলি দখলদারিত্ব, যুদ্ধাপরাধের দায়বদ্ধতা, এবং ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও ক্ষতিপূরণের অধিকার—সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করছে। এরমাঝে নতুন করে আসছে মার্কিন ঘাঁটি বানানোর খবর।