সংগ্রাম ডেস্ক : দুর্ভিক্ষ আর মহামারীর আরও দ্বারপ্রান্তে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা। ইসরাইলী লাগাতার হামলা এবং ত্রাণ বহর প্রবেশে কড়াকড়ি পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর করে তুলেছে। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চরম দুর্ভিক্ষ ও মানবিক সংকট নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ১০০-রও বেশি আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ), অক্সফ্যামসহ একাধিক আন্তর্জাতিক এনজিও এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজায় এখন গণদুর্ভিক্ষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং সেখানকার মানুষ ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছেন। আল-জাজিরা, এএফপি, রয়টার্স।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ তীব্র অপুষ্টি দেখা যাচ্ছে। পানিবাহিত রোগ যেমন তীব্র ডায়রিয়া মহামারী আকারে ছড়াচ্ছে। বাজারে খাবার নেই, রাস্তাঘাটে আবর্জনার স্তূপ, আর প্রাপ্তবয়স্করা ক্ষুধা ও পানিশূন্যতায় রাস্তায় লুটিয়ে পড়ছেন। এনজিওগুলোর দাবি, গাজায় বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে মাত্র ২৮টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে পারছে, যা ২০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য খুবই কম। জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন মানবিক সহায়তা ব্যবস্থাটি ব্যর্থ হয়নি বরং এটি কার্যকর হতে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বিবৃতিতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, “এখন আর অনুমতির অপেক্ষা করার সময় নেই। জরুরি ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি তুলতে হবে, প্রশাসনিক বাধা সরিয়ে নিতে হবে, সব সীমান্ত পয়েন্ট খুলে দিতে হবে, এবং গাজার প্রতিটি মানুষের কাছে নিরবচ্ছিন্ন সাহায্য পৌঁছে দিতে হবে।” তারা আরও বলেছে, বিমানের মাধ্যমে ত্রাণ ফেলা বা সীমিত চুক্তিভিত্তিক উদ্যোগগুলো বাস্তবে পরিস্থিতি আড়াল করার একটি ধোঁয়াশা সৃষ্টি করে। এগুলো কোনোভাবেই রাষ্ট্রগুলোর আইনি ও নৈতিক দায়িত্বের বিকল্প হতে পারে না। বিবৃতির শেষাংশে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, রাষ্ট্রগুলোর এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে আর বাঁচানোর মতো কেউই অবশিষ্ট থাকবে না। গাজায় ব্যাপক মাত্রায় অনাহার ছড়িয়ে পড়েছে
শতাধিক সংস্থার দাবি: গাজাজুড়ে ব্যাপক মাত্রায় অনাহার ছড়িয়ে পড়েছে বলে সতর্ক করেছে ১০০টিরও বেশি সাহায্য সংস্থা। তারা অভিযোগ করেছে, ইসরাইল গাজার ভেতরে খাদ্য বিতরণ করতে দিচ্ছে না। সেভ দ্য চিলড্রেন এবং মেডেসিনস স্যান্স ফ্রন্টিয়ের্স (এমএসএফ)-সহ ১০০টিরও বেশি সংস্থা এক যৌথ বিবৃতিতে এ অভিযোগ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ফিলিস্তিনিরা আশা ও হৃদয়ভঙ্গের ফাঁদে পড়েছে। সহযোগিতা ও যুদ্ধবিরতির জন্য অপেক্ষা করে তারা দেখছে ভয়াবহ পরিস্থিতি।’ ইসরাইল স্বীকার করেছে যে গাজায় সহায়তার পরিমাণ কমেছে। যদিও এর কর্মকর্তারা বলছেন, খাদ্য আছে, কিন্তু সংস্থাগুলো তা মানুষকে দিতে পারছে না। সংস্থাগুলোর চিঠিতে বলা হয়েছে, দিনে মাত্র ২৮টির মতো ট্রাক এখন গাজায় যাচ্ছে। যদিও জাতিসংঘ দিনে কমপক্ষে ৬০০ ত্রাণবাহী লরি পাঠানোর কথা বলেছিলো। ইসরাইলী ডিফেন্স ফোর্স বা আইডিএফ বলছে, ত্রাণসহ ৯৫০টি ট্রাক এখন আছে এবং সাহায্য সংস্থাগুলোর উচিত সেগুলো বিতরণ করা।
অনাহারের ঝুঁকি: গাজা থেকে কর্মীদের সরিয়ে নিচ্ছে এএফপি
গাজা থেকে নিজেদের কর্মীদের সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বার্তা সংস্থা এজেন্সি ফ্রান্স প্রেস (এএফপি)। ইসরাইলের অব্যাহত হামলা ও বিমান হামলার ফলে অনাহারের ঝুঁকি নিয়ে সাংবাদিক সমিতি এসডিজে’র সতর্কবার্তার পর এ ঘোষণা দেয় বার্তা সংস্থাটি। এএফপি কর্তৃপক্ষ গত সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছে, ‘তাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এবং তাই আমরা ইসরাইলী কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের পরিবারসহ অবিলম্বে সরিয়ে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।’
পোস্টে আরও লেখা হয়, তারা গাজা উপত্যকায় তাদের সহযোগীদের সম্মুখীন হওয়া ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে গাজা থেকে আটজন কর্মী এবং তাদের পরিবারকে সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেবিষয়টি উল্লেখ করে এএফপি বলছে, তারা তাদের ফ্রিল্যান্স কনট্রিবিউটরদের জন্যও একই পদক্ষেপ নেবে। এতে বলা হয়েছে, ‘কয়েক মাস ধরে, আমরা অসহায়ভাবে তাদের জীবনযাত্রার অবস্থার নাটকীয় অবনতি প্রত্যক্ষ করেছি। তাদের অনুকরণীয় সাহস, পেশাদার প্রতিশ্রুতি এবং স্থিতিস্থাপকতা সত্ত্বেও, তাদের পরিস্থিতি এখন অসহনীয়।’ এর আগে এসডিজে এক এক্স পোস্টে লেখে, ১৯৪৪ সালের আগস্টে এএফপি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে আমরা সংঘাতে সাংবাদিকদের হারিয়েছি, আহত হয়েছি এবং বন্দি হয়েছ। কিন্তু আমাদের কেউই ক্ষুধার্ত অবস্থায় কোনও সহকর্মীর মৃত্যু দেখার কথা ভাবতেও পারি না। গত ২ মার্চ থেকে ইসরাইল গাজায় খাদ্য, ওষুধ এবং মানবিক সাহায্যের প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরাইল গাজায় আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১০১ জন অপুষ্টি ও অনাহারে মারা গেছে। এর মধ্যে ৮০ জনই শিশু। আর অধিকাংশ মৃত্যুই হয়েছে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে।
ইসরাইলের বিরুদ্ধে পুরোদমে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার
দাবি যুক্তরাজ্যের প্রায় ৬০ পার্লামেন্ট সদস্যের
ইসরাইলে অস্ত্র রপ্তানির ওপর পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা জারির আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিটেনের প্রায় ৬০ জন এমপি ও লর্ড (পার্লামেন্টের নি¤œকক্ষ হাউস অব কমন্স ও উচ্চকক্ষ লর্ড সভার সদস্য)। এক যৌথ চিঠিতে এ আহ্বান জানান ব্রিটিশ আইনপ্রণেতারা। পাশাপাশি সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানির জন্য সরকার যে লাইসেন্স ইস্যু করে, তার ব্যাপারে আরও স্বচ্ছতা আনার দাবি জানিয়েছেন। ১৮ জুলাই ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি ও বাণিজ্যমন্ত্রী জোনাথন রেনল্ডসের কাছে পাঠানো চিঠিতে এ দাবি জানানো হয়। এর আগেই ল্যামি হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতিতে না এলে ইসরাইলের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে। ইতিমধ্যে ব্রিটেন ফিলিস্তিনিদের মানবিক মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করার জন্য অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্সসহ ২৭টি দেশের সঙ্গে যৌথভাবে ইসরাইলের নিন্দা এবং দেশটির প্রতি ফিলিস্তিনের গাজায় জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ সরবরাহে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
গত মঙ্গলবার আইটিভির গুড মর্নিং ব্রিটেন অনুষ্ঠানে ল্যামি বলেন, ‘গত কয়েক মাসে আমরা একাধিক নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছি। (গাজায় ইসরাইলের) আচরণে পরিবর্তন না এলে এবং মানুষের দুর্দশার অবসান ঘটানো না হলে ভবিষ্যতে সব ধরনের বিকল্প গ্রহণ করার কথা বিবেচনায় আছে।’ গত কয়েক মাসে আমরা একাধিক নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছি। (গাজায় ইসরাইলের) আচরণে পরিবর্তন না এলে এবং মানুষের দুর্দশার অবসান ঘটানো না হলে ভবিষ্যতে সব ধরনের বিকল্প গ্রহণ করার কথা বিবেচনায় আছে। চিঠিতে স্বাক্ষরকারী এমপি ও লর্ডদের দাবি, ইসরাইলে অবিলম্বে সব ধরনের অস্ত্র রপ্তানি বন্ধ না করলে ব্রিটিশ সরকার গণহত্যায় সহায়তাকারী হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। পার্লামেন্টের এই সদস্যদের কয়েকজন হলেন জারাহ সুলতানা, জন ম্যাকডোনেল ও জেরেমি করবিন। চিঠির সমন্বয় করা লেবার এমপি স্টিভ উইদারডেন বলেন, ইসরাইল গাজা মিশিয়ে দিতে যেসব যুদ্ধবিমান ব্যবহার করছে, সেগুলোর ১৫ শতাংশ যন্ত্রাংশ ব্রিটেনে তৈরি। এ বাস্তবতা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। ব্রিটিশ সরকারের রপ্তানি লাইসেন্স ছাড়া এ যুদ্ধবিমানগুলো উড়তে পারত না, বোমা ফেলতে পারত না।
উত্তর দাবি করছেন এমপিরা: গত মাসের পার্লামেন্ট বিতর্কের পরপরই আইনপ্রণেতারা এ চিঠি দেন। ওই বিতর্কে ইসরাইলের কাছে অস্ত্র রপ্তানির অনুমতি নিয়ে আলোচনা হয়। ২০২৪ সালে ইসরাইলে ব্রিটেনের অস্ত্র রপ্তানির তথ্য প্রকাশ করে এক্সপোর্ট কন্ট্রোল জয়েন্ট ইউনিট (ইসিজেইউ)। এমপি ও লর্ডরা চিঠিতে এ–সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা চেয়েছেন। ইতিমধ্যে ব্রিটেন ফিলিস্তিনিদের মানবিক মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করার জন্য অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্সসহ ২৭টি দেশের সঙ্গে যৌথভাবে ইসরাইলের নিন্দা এবং দেশটির প্রতি ফিলিস্তিনের গাজায় জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ সরবরাহে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। বিতর্কে ট্রেডমন্ত্রী ডগলাস আলেকজান্ডার দাবি করেন, ২০২৪ সালে ইসরাইলের জন্য অনুমোদিত ১৪২ মিলিয়ন পাউন্ডের রপ্তানি লাইসেন্সের অধিকাংশ ছিল প্রকৃতপক্ষে ন্যাটো মিত্রসহ তৃতীয় দেশগুলোতে যন্ত্রাংশ পুনঃরপ্তানির উদ্দেশ্যে। তবে চিঠিতে বলা হয়েছে, ইসিজেইউর তথ্যে দেখা যায়, ২০২৪ সালে ইস্যু করা ১৪১ দশমিক ৬ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের ‘স্ট্যান্ডার্ড ইন্ডিভিজ্যুয়াল এক্সপোর্ট লাইসেন্স’-এর অর্ধেকের বেশি সরাসরি ইসরাইলে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে ইস্যু করা হয়েছে বলে মনে হয়। চিঠিতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, মন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী অধিকাংশ লাইসেন্স তৃতীয় দেশের জন্যÍএ দাবির সঙ্গে ইসিজেইউর প্রকাশিত তথ্য কীভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়?
আলেকজান্ডার আরও বলেন, ইসরাইলের জন্য অনুমোদিত সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানি লাইসেন্সগুলোর মধ্যে ১২০ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি, অর্থাৎ মোট মূল্যের প্রায় ৮৫ শতাংশ ‘একটি নির্দিষ্ট ন্যাটো মিত্রের জন্য একটি একক প্রকল্পে ইসরাইলী কোম্পানিগুলোর সামরিক পণ্য রপ্তানিতে সহায়তায় ব্যবহারের’ উদ্দেশ্যে ছিল। চিঠিতে এমপি ও লর্ডরা জানতে চেয়েছেনÍপ্রকল্পটি কী, কোন ন্যাটো মিত্র এতে জড়িত, প্রকল্পটি কখন শুরু হয়েছে এবং এর প্রকৃত উদ্দেশ্য কী। স্টিভ উইদারডেন বলেন, অস্ত্র রপ্তানি নিয়ে স্বচ্ছতার দাবিতে বারবার চাপ দেওয়া হলেও সরকার এখন পর্যন্ত কোনো জবাব দেয়নি। ‘যেসব রাষ্ট্র বেসামরিক মানুষের ওপর নির্বিচার হত্যাকা- চালাচ্ছে, তাদের কাছে কোন ধরনের অস্ত্র যাচ্ছে, সে তথ্যের ব্যাপারে আমাদের ন্যূনতম সততা থাকা উচিত’, বলেন উইদারডেন।
আদালতের রায়: গত মাসে ব্রিটিশ হাইকোর্ট একটি মামলা খারিজ করে দেন। মামলাটিতে মানবাধিকার সংগঠনগুলো ব্রিটেনের নির্মিত এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের যন্ত্রাংশ ইসরাইলে রপ্তানি বন্ধের আবেদন করেছিল। এ যন্ত্রাংশ বিশ্বব্যাপী একটি যৌথ সরবরাহব্যবস্থার মাধ্যমে ইসরাইলে যায়। ইসরাইল গাজা মিশিয়ে দিতে যেসব যুদ্ধবিমান ব্যবহার করছে, সেগুলোর ১৫ শতাংশ যন্ত্রাংশ ব্রিটেনে তৈরি। এ বাস্তবতা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। ব্রিটিশ সরকারের রপ্তানি লাইসেন্স ছাড়া এ যুদ্ধবিমানগুলো উড়তে পারত না, বোমা ফেলতে পারত না। এ নিয়ে ২০ মাস ধরে আইনি লড়াই শেষে বিচারকেরা বলেন, বিষয়টি আদালতের নয়; বরং নির্বাহী বিভাগের এখতিয়ারভুক্ত, যারা পার্লামেন্ট ও চূড়ান্তভাবে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য।
ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভের দায়ে প্রায় ৮০ শিক্ষার্থীকে
কঠোর শাস্তি দিল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়
গাজায় ইসরাইলী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করায় যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৮০ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার, ডিগ্রি প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন ধরনের সাজা দেওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার শিক্ষার্থীদের সংগঠন কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি অ্যাপারথিড ডাইভেস্ট (সিইউএডি) এ তথ্য জানিয়েছে। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ইসরাইলের সঙ্গে সব ধরনের আর্থিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি জানিয়ে আসছে এ সংগঠন। সিইউএডির এক বিবৃতিতে বলা হয়, যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কারণে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ শিক্ষার্থীকে হয় বহিষ্কার করা হয়েছে, নয় তিন বছর পর্যন্ত তাঁদের শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
২০২৪ সালে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে তাঁবু গেড়ে অবস্থান নেন ও বিক্ষোভ করেন। এ বিক্ষোভ বিশ্বের অনেক দেশে ইসরাইলের গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করতে সাহায্য করে। শেষ পর্যন্ত কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শত শত পুলিশকে ক্যাম্পাসে ঢোকার অনুমতি দিলে আন্দোলনের জায়গাগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। গ্রেপ্তার করা হয় অনেক শিক্ষার্থীকে। এক বিবৃতিতে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা ২০২৫ সালের মে মাসে বাটলার লাইব্রেরিতে বিশৃঙ্খলা ও ২০২৪ সালের বসন্তে ‘অ্যালামনাই উইকেন্ড’-এ তাঁবু স্থাপন করে ক্যাম্পাসে অবস্থানের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এ বিবৃতিতে আরও বলা হয়,শিক্ষা কার্যক্রমে বিঘœ ঘটানো বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা ও নিয়মের লঙ্ঘন। এমন লঙ্ঘনের জন্য অবশ্যই পরিণাম ভোগ করতে হবে। তবে সিইউএডি বলেছে, বিশ্ববিদ্যালয় যে শাস্তি দিয়েছে, তা আগের যেকোনো শিক্ষা কর্মসূচি বা ফিলিস্তিন ছাড়া অন্য কোনো ইস্যুতে ভবন দখলের ঘটনার শাস্তির তুলনায় অনেক বেশি কঠোর। তারা আরও বলেছে, ‘আমাদের থামানো যাবে না। আমরা ফিলিস্তিনের মুক্তির লড়াই চালিয়ে যাব।’
২০২৪ সালে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে তাঁবু গেড়ে অবস্থান নেন ও বিক্ষোভ করেন। এ বিক্ষোভ বিশ্বের অনেক দেশে ইসরাইলের গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করতে সাহায্য করে। শেষ পর্যন্ত কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শত শত পুলিশকে ক্যাম্পাসে ঢোকার অনুমতি দিলে আন্দোলনের জায়গাগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় এবং অনেক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কঠোর দমন-পীড়নের পরও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন থেকে পিছু হটেননি। চলতি বছরের মে মাসে চূড়ান্ত পরীক্ষা চলার সময় শিক্ষার্থীরা বাটলার লাইব্রেরি দখল করেন। তাঁরা দাবি তোলেন, ইসরাইলী সেনাবাহিনীর সঙ্গে জড়িত কোম্পানিগুলো থেকে বিশ্ববিদ্যালয় যেন বিনিয়োগ সরিয়ে নেয়। সেই সঙ্গে তাঁরা গাজার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কঠোর দমন-পীড়নের পরও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন থেকে পিছু হটেননি। চলতি বছরের মে মাসে চূড়ান্ত পরীক্ষা চলার সময় শিক্ষার্থীরা বাটলার লাইব্রেরি দখল করেন। তাঁরা দাবি তোলেন, ইসরাইলী সেনাবাহিনীর সঙ্গে জড়িত কোম্পানিগুলো থেকে বিশ্ববিদ্যালয় যেন বিনিয়োগ সরিয়ে নেয়। সেই সঙ্গে গাজার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন তাঁরা।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিচারিক বোর্ড বলেছে, পাঠ কার্যক্রম চলাকালে বিশৃঙ্খলার অভিযোগে কিছু ছাত্রকে বহিষ্কার, সাময়িকভাবে পড়াশোনার সুযোগ স্থগিত কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া ডিগ্রি বাতিল করা হয়েছে। কতজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে, তা স্পষ্টভাবে বলা হয়নি। তবে কর্তৃপক্ষ বলেছে, এটাই ওই ঘটনার বিষয়ে নেওয়া চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। এ ঘটনার মধ্যেই কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে প্রায় ৪০ কোটি ডলারের সরকারি তহবিল ফেরত পাওয়ার বিষয়ে আলোচনা করছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইহুদি শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক হয়রানি করার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি উল্লেখ করে ওই অর্থসহায়তা বন্ধ করে দিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন।