রয়টার্স: আফগানিস্তান-পাকিস্তানের মধ্যে আয়োজিত দোহা বৈঠক ইতিবাচন হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল রবিবার দুদেশের তরফ থেকেই জানানো হয়, বিগত কয়েক দিনের ভয়াবহ সীমান্ত সংঘাত অবসানের জন্য যুদ্ধবিরতির বিষয়ে দুপক্ষই রাজি হয়েছে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ এক্সে জানান, যুদ্ধবিরতি চূড়ান্ত করতে আগামী ২৫ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে দুই পক্ষ আবার বৈঠকে বসবে। সেখানে খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনা হবে। তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ এক বিবৃতিতে বলেন, দুই পক্ষ একটি সামগ্রিক ও কার্যকর যুদ্ধবিরতিতে একমত হয়েছে। তিনি বলেন, কোনও দেশই অপরের বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক পদক্ষেপ না নেওয়া এবং পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে সক্রিয় গোষ্ঠীগুলোকে কোনও সহায়তা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় দোহা বৈঠকে। পাকিস্তানের পক্ষে আসিফ এবং আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মুহাম্মদ ইয়াকুবের নেতৃত্বে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরবর্তী বৈঠকের লক্ষ্য হবে যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা এবং তা নির্ভরযোগ্যভাবে কার্যকর হচ্ছে কি না তা যাচাই করা। দোহা বৈঠকে কাতারের সঙ্গে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তুরস্কও সম্পৃক্ত ছিল। সপ্তাহব্যাপী সংঘর্ষে ডজনখানেক মানুষ নিহত এবং শতাধিক আহত হওয়ার পর দুই দেশ এখন উত্তরণের পথ খুঁজছে। গত শুক্রবার সীমান্তের কাছে আত্মঘাতী বোমা হামলায় সাত পাকিস্তানি সেনা নিহত ও ১৩ জন আহত হয় বলে সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ২০২১ সালে তালেবান কাবুলের ক্ষমতা দখলের পর থেকে এটি দুই প্রতিবেশীর মধ্যে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। দুই পুরনো মিত্রের মধ্যে স্থলযুদ্ধ এবং পাকিস্তানের সীমান্তজুড়ে বিমান হামলার সূত্রপাত ঘটে যখন ইসলামাবাদ অভিযোগ তোলে যে, আফগানে অবস্থানরত সন্ত্রাসীরা পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে এবং কাবুল সরকার তাদের নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে। গত শনিবার এক অনুষ্ঠানে পাকিস্তান সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির বলেন, আফগান মাটি ব্যবহার করে যেসব প্রক্সি গোষ্ঠী পাকিস্তানে ভয়াবহ হামলা চালাচ্ছে, তালেবান শাসকদের উচিত তাদের লাগাম টানা। তালেবান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা কোনও সশস্ত্র গোষ্ঠীকে আশ্রয় দেয়নি। বরং পাকিস্তানই আফগানিস্তানের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে ইসলামিক স্টেট সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিচ্ছে। ইসলামাবাদও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পাকিস্তানে বহু বছর ধরে সন্ত্রাসীরা সরকারবিরোধী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, যেখানে তাদের লক্ষ্য ইসলামি শরিয়া ভিত্তিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা।