ইন্টারনেট: গত সোমবার রাতভর ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন কলকাতা। শহরের অন্যতম সড়কগুলো তলিয়ে গেছে। গোটা কলকাতা যেন পানির ওপর ভাসছে। বৃষ্টি ও বন্যা সংশ্লিষ্ট কারণে এখন পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। কলকাতার বেনিয়াপুকুর, কালিকাপুর, নেতাজি নগর, গড়িয়াহাট ও ইকবালপুরে এসব প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এসব এলাকা কলকাতার মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে বিস্তৃত। গত সোমবার রাত থেকেই বৃষ্টি শুরু হয় পশ্চিমবঙ্গের রাজধানীতে। মঙ্গলবার ভোর হতে তা চরমে পৌঁছে যায়। ১ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ১০০ মিলিমিটারেরও বেশি। কয়েকটি জায়গায় তিন ঘণ্টায় ২০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টির রেকর্ড করা হয়েছে।
দুর্গাপূজার কয়েক দিন আগে এমন ভারী বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষ। আলিপুর আবহাওয়া দফতর বলছে, দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে জারি হয়েছে লাল সতর্কতা। গত তিন ঘণ্টায় কলকাতাসহ গোটা দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হয়েছে। ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়াও বয়ে গেছে। এছাড়া দুই মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়াসহ দক্ষিণবঙ্গের আর জেলাগুলিতে জারি হয়েছে হলুদ সতর্কতা।
এদিকে শহরের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টির মাত্রা বেশি ছিল। কলকাতা পৌরসভার তথ্য অনুযায়ী, গড়িয়া কামদাহারিতে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ৩৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে। এ ছাড়া জোধপুর পার্কে ২৮৫ মিলিমিটার, কালীঘাটে ২৮০ মিলিমিটার, তোপসিয়ায় ২৭৫ মিলিমিটার এবং বালিগঞ্জে ২৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে নগরে ব্যাপক যানজট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি শহরের উপকণ্ঠে রেল ও মেট্রো সেবার ওপরও প্রভাব পড়েছে। শহরের অনেক নিচু এলাকার বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। কয়েকটি স্কুল বৃষ্টির কারণে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সড়কগুলো জলাবদ্ধ থাকায় ফ্লাইট ধরার জন্য কলকাতা বিমানবন্দরের অভিমুখী যাত্রীদেরও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এয়ার ইন্ডিয়া ও ইন্ডিগো জানিয়েছে, আজ ফ্লাইট বিলম্বিত হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে কলকাতার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। স্থানীয় আবহাওয়া দফতর বলেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে এই ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। কলকাতা শহরে আরও বৃষ্টি হতে পারে।