রয়টার্স : যুক্তরাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নারীদের অসাধারণ সাফল্যের পরও তারা ভালো বেতন, সুরক্ষিত চাকরি এবং উন্নতির সুযোগ সম্পন্ন ক্যারিয়ার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দেশটির জাতীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক গবেষণা ইনস্টিটিউট (ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল রিসার্চ বা এনআইইএসআর) এবং বৃহত্তর লন্ডন কর্তৃপক্ষের (গ্রেটার লন্ডন অথরিটি বা জিএলএ) এর একটি নতুন প্রতিবেদন লন্ডনের কর্মক্ষেত্রে বাংলাদেশি এবং পাকিস্তানি নারীদের মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জগুলোর উপর আলোকপাত করেছে।

প্রতিবেদনে পদ্ধতিগত বর্ণবাদ, অনমনীয় কর্মক্ষেত্র এবং সাংস্কৃতিক গতানুগতিকতাকে মূল বাধা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২২ সালে লন্ডনে বাংলাদেশি এবং পাকিস্তানি নারীদের প্রায় ৪৮ দশমিক ১ শতাংশ অর্থনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। তাদের বেকারত্বের হার ছিল ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ, যা তাদের পুরুষ সহকর্মীর তুলনায় তিন গুণেরও বেশি।

বেতনের বিষয়ে উল্লেখযোগ্য লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যের কারণে এই আর্থিক ফারাক আরও তীব্র হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশি নারীরা পুরুষদের চেয়ে ৫০ শতাংশ কম উপার্জন করেন। এই বিশাল চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নারীদের রয়েছে উত্তরোত্তর সাফল্যের গল্প। গত দুই দশকে, তাদের কর্মসংস্থানের হারে একটি উল্লেখযোগ্য ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেছে। বাংলাদেশি এবং পাকিস্তানি জাতিগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান হার ২০০৪ সালে ৪৪ শতাংশ থেকে ২০২২ সালে ৬১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

অনেক ব্রিটিশ-বাংলাদেশি নারী, যারা তাদের পরিবারের মধ্যে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছেন, তারা নীরবে তাদের শক্তি দিয়ে বাধা অতিক্রম করছেন। তারা এমন একটি কাঠামোতে নিজেদের স্থান করে নিচ্ছেন যা তাদের জন্য তৈরি হয়নি এবং ডাক্তার, আইনজীবী, প্রকৌশলী, উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলছেন। ব্রিটিশ-বাংলাদেশী কমিউনিটির সংগঠক ইয়াসমিন মাহমুদ পলিন বলেন, বহু চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নারীরা নিজের এবং পরিবারের জন্য একটি উন্নত ভবিষ্যৎ গড়ার দৃঢ় সংকল্প নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন, যা যুক্তরাজ্যের সর্বত্র পরিবর্তনের অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে।