দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক ঘাঁটিতে বিস্ফোরণ
দক্ষিণ কোরিয়ার একটি সামরিক ঘাঁটিতে মহড়ার সময় বিস্ফোরণে অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন। বুধবার দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী শহর পাজুতে একটি ঘাঁটিতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। সেখানে একটি আর্টিলারি ইউনিটের মহড়ায় স্থানীয় সময় বুধবার বিকেল ৩টা ২৪ মিনিটে একটি সিমুলেশন গোলা হঠাৎ বিস্ফোরিত হয়। আহতদের মধ্যে অন্তত দুই সেনার হাতে ও উরুতে পুড়ে গিয়ে গুরুতর ক্ষত হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। দুর্ঘটনাস্থলেই সামরিক চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা দেন এবং অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকর্মীরা ছয়টি অ্যাম্বুল্যান্স পাঠায়। বিস্ফোরণের কারণ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। পাজুর সামরিক ঘাঁটিটি রাজধানী সিউল থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কড়া সুরক্ষিত সীমান্তের কাছে অবস্থিত, যেখানে রয়েছে একাধিক দক্ষিণ কোরীয় সামরিক স্থাপনা। রয়টার্স।
এক মন্ত্রীর দুই চিত্র
নেপালের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন চরম উত্তাল। মাত্র চার দিনের ব্যবধানে দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আরজু রানা দেউবার জীবন সম্পূর্ণ বদলে গেছে। কিছুদিন আগেও যিনি ছিলেন সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী, এখন তিনিই গণরোষের শিকার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে শুরু হওয়া আন্দোলন এখন সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত ৪ সেপ্টেম্বর এক আনুষ্ঠানিকতা। তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আরজু রানা দেউবা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের দেওয়া দুটি নতুন সামরিক বিমান উদ্বোধন করছেন। সেদিন তিনি দুই দেশের শক্তিশালী সম্পর্কের কথা বলছিলেন,যুক্তরাষ্ট্রকে নেপালের উন্নয়নে সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছিলেন। মন্ত্রীর সেই সময়ের ছবিগুলো এখন যেন এক অন্য সময়ের কথা বলছে। মাত্র চার দিনের মাথায়, অর্থাৎ ৮ সেপ্টেম্বর, সেই একই মন্ত্রী নিজের বাড়িতে আক্রমণের শিকার হন। ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা তার কাঠমান্ডুর বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায়। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীরা তাকে ও তার স্বামী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবাকে মারধর করছে। গণরোষের মুখে মন্ত্রীকে নিজের জীবনের জন্য আকুতি জানাতে দেখা যায়।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া এই আন্দোলন দ্রুতই ব্যাপক আকার ধারণ করে। বিক্ষোভ দমনে সরকারের কঠোর পদক্ষেপের কারণে ১৯ জন আন্দোলনকারী নিহত হলে পরিস্থিতি আরও সহিংস হয়ে ওঠে। এই বর্বরতার প্রতিবাদে জনতা রাস্তায় নেমে আসে, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করে এবং রাজনীতিবিদদের উপর হামলা শুরু করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়ে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর দেশের নিয়ন্ত্রণ এখন সেনাবাহিনীর হাতে। জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে এবং সেনাবাহিনী জনগণকে লুটপাট, ভাঙচুর ও হামলা থেকে বিরত থাকতে সতর্ক করেছে। পরিস্থিতি শান্ত করতে নেপালের প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পৌডেল আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। তিনি সকলকে শান্ত থাকার এবং আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। ৪ সেপ্টেম্বরের মন্ত্রীর ছবি এবং ৮ সেপ্টেম্বরের রক্তাক্ত মুখের ছবি। এই দুটি দৃশ্য নেপালের দ্রুত পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রতীক হয়ে উঠেছে। এনডিটিভি
ডিআর কঙ্গোতে বিদ্রোহীদের হামলায় নিহত ৬১
আফ্রিকার মধ্যাঞ্চলীয় দেশ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে এক অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অ্যালাইড ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস (এডিএফ) বিদ্রোহীদের হামলায় নিহত হয়েছেন ৬১ জনেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সমর্থিত এডিএফের সদস্যরা চাপাতি ব্যবহার করে হামলাটি চালিয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। পূর্ব কঙ্গোর কর্মকর্তারা এই তথ্য জানিয়েছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এটি গোষ্ঠীটির সর্বশেষ বড় আকারের হামলা। স্থানীয় প্রশাসক ম্যাকায়ার সিভিকুনুলা জানান, সোমবার রাতের দিকে উত্তর কিভু প্রদেশের লুবেরো অঞ্চলের নটোয়ো শহরে এই হত্যাকা- ঘটে। তিনি বলেন, ‘আমি প্রাথমিভাবে ৫০ জনের মৃত্যুর সংখ্যা নিশ্চিত করতে পেরেছি। রাত ৯টার দিকে নটোয়ো গ্রামে শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের সময় নিহতদের আটক করা হয় এবং তাদের বেশির ভাগকেই চাপাতি দিয়ে হত্যা করা হয়। তদন্ত এখনো অব্যাহত রয়েছে।’ তবে লুবেরোর সামরিক প্রশাসক কর্নেল আলাইন কিওয়েওয়া রয়টার্সকে জানিয়েছেন, নিহতের সংখ্যা প্রায় ৬০ এবং আরো অনেকেই নিখোঁজ, তাই নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। পূর্ব কঙ্গোর খনিজসমৃদ্ধ এই অঞ্চলে জমি ও সম্পদ নিয়ে বহু মিলিশিয়া সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে, যার মধ্যে এডিএফও অন্যতম। কঙ্গোর সেনাবাহিনী এবং তাদের মিত্র উগান্ডা জানিয়েছে, তারা বর্তমানে এডিএফের বিরুদ্ধে অভিযান তীব্র করেছে। গত মাসে এডিএফের একাধিক হামলায় ৫০ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়, যেখানে একটি গির্জায় হামলায় ৩৮ জনের প্রাণহানি ঘটে জুলাই মাসে। রয়টার্স।