বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান, এনডিটিভি : ছোটোবেলায় শিক্ষাকে আর্থিক স্বার্থের সঙ্গে জুড়ে অনেকে শেখাতেন, লেখাপড়া করে যে, গাড়ি-ঘোড়া চড়ে সে। তবে মাকিনাক দ্বীপে গেলে, যতই লেখাপড়া শিখে সমাজের উঁচু স্তরে পৌঁছানো হোক না কেন, চড়তে হবে ঘোড়াতেই।

মাকিনাক দ্বীপে গেলে মনে হবে যেন ওয়েস্টার্ন গল্পের একটুকরো ভূমি। সেখানে গাড়ির হর্নের বদলে শোনা যাবে ঘোড়ার চিহিহি ডাক। যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ির রাজধানী ডেট্রয়েটে অবস্থিত হলেও ৬০০ মানুষ ও সমসংখ্যক ঘোড়ার দ্বীপটিতে এখনও মোটরগাড়ি ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

স্থানীয় দোকানদার উরভানা ট্রেসি মোর্স বলছেন, এখানে ঘোড়াই রাজা।

মিশিগান অঙ্গরাজ্যে হিউরন হ্রদের মাঝে অবস্থিত মাকিনাক দ্বীপে গলফ কার্ট চলাচলের অনুমতিও নেই। তাই সেখানে আচমকা জোরালো কোনও আওয়াজ শুনলে ধরেই নেবেন সেটা দ্বীপের ঘোড়া বা পাখির কাছ থেকে এসেছে। লোকমুখে জানা যায়, ১৮৯৮ সালে এক গাড়ির ব্যাকফায়ারে স্থানীয় ঘোড়াগুলো মারাত্মক ঘাবড়ে যায়। তখন থেকেই দ্বীপের অভ্যন্তরে ইঞ্জিনচালিত বাহন নিষিদ্ধ। এরপর থেকে তথাকথিত আধুনিকতার বদলে শান্ত জীবনযাপনকেই গুরুত্ব দিয়েছেন দ্বীপের বাসিন্দারা।

প্রতি গ্রীষ্মে সাধারণ জীবনের স্বাদের সন্ধানে প্রায় ১২ লাখ মানুষ মাকিনাকে আসেন। দ্বীপের বিখ্যাত ফাজ , ৭০ মাইলের ট্রেইল, ঘোড়ার খুঁড়ের শব্দে তারা হারিয়ে যেতে চান শান্ত, নিরিবিলি অতীতে।

মাকিনকের নামকরণের ইতিহাস অনেক পুরোনো। দ্বীপের চুনাপাথরের ঢাল এবং সবুজ বনের সঙ্গে বিশালকায় কচ্ছপের পিঠের মিল থাকায় স্থানীয় আদিবাসীরা এর নাম দিয়েছিলেন ‘মিচিলিমাকিনাক’ বা বাংলায় বলা যেতে পারে ‘মহান কচ্ছপের স্থান’। বহু শতাব্দী ধরে এই দ্বীপকে মাছধরা ও শিকারের স্থান হিসেবে ব্যবহার করেছেন তারা।

পরবর্তী সময়ে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে ১৭৮০ সালে একটি প্রতিরক্ষা দুর্গ স্থাপন করা হয়। তখন দ্বীপের নাম সংক্ষেপে হয়ে যায় মাকিনাক। আজও দর্শনার্থীরা সেখানে ঐতিহাসিক ক্যানন ফায়ারিং দেখতে পারেন। বিশেষ পোশাকধারী গাইডের সঙ্গে ঘুরে তারা মিশিগানের প্রাচীনতম ভবনগুলোতে ইতিহাসের খোঁজ করেন। দ্বীপটিতে রয়েছে ১৩৮ বছরের পুরনো গ্র্যান্ড হোটেল, যার সজ্জিত কক্ষ এবং দীর্ঘ বারান্দা বিশেষ স্বাতন্ত্র্যের দাবিদার।

দ্বীপের ৮০ শতাংশ এলাকা মাকিনাক দ্বীপ স্টেট পার্কের অন্তর্ভুক্ত, যেখানে পর্যটকরা প্রাচীন বন, চুনাপাথরের স্তম্ভ, হাইকিং, সাইকেল বা ঘোড়ার গাড়িতে ঘুরে আর্ক রক দেখতে পারেন। দ্বীপে চলাচলের আরেকটি প্রধান মাধ্যম হচ্ছে সাইকেল। এখানে ভাড়া দেওয়ার জন্য প্রায় দেড় হাজার সাইকেল রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা হান্টার হোগল্যান্ড বলেন, ঘোড়া ছাড়া এখানকার জীবন অসম্পূর্ণ। খুঁড়ের শব্দ শুনলে মনে হবে অতীতে ফিরে গেছেন।

শীতকালে দ্বীপটি প্রায় সময়ে বরফ ঢেকে যায় এবং ফেরি পরিষেবা বন্ধ থাকে। তবে বসন্ত ও গ্রীষ্মে দ্বীপে প্রাণ ফিরে আসে। লাইলাক ফেস্টিভ্যালের সময় গাছগুলো ফুলে ভরে ওঠে, রাতের আকাশ দেখা যায় ফোর্ট হোল্মস।

সবচেয়ে বড় কথা—ইঞ্জিনের শব্দ ছাড়া মানুষ, ঘোড়া এবং প্রকৃতি মিলে অতীতের শান্ত, সুশৃঙ্খল জীবনকে ধরে রেখেছে মাকিনাকে।

ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে আরও বলেন, তিনি ‘যুদ্ধে হেরে যাচ্ছেন’ এবং ‘পুতিন যদি চায়, তাহলে তিনি তোমাদের ধ্বংস করে দেবে’।

বৈঠকের এক পর্যায়ে, বারবার দেখার কথা উল্লেখ করে ট্রাম্প ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রের মানচিত্রগুলো একপাশে সরিয়ে রাখেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

চলমান সংঘাত নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘এই রেড লাইন, আমি জানিও না এটি কোথায়। আমি কখনও সেখানে যাইনি।’