রয়টার্স : পাকিস্তানে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভে দেশটির পুলিশের সঙ্গে কট্টরপন্থী একটি গোষ্ঠীর সদস্যদের মাঝে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল সোমবারের এই সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন বলে দেশটির পুলিশ জানিয়েছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা যুদ্ধবিরতি ঘোষণার এক সপ্তাহ আগে দেশটিতে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান (টিএলপি)। অতীতেও বিভিন্ন সময়ে এই গোষ্ঠীর বিক্ষোভে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনার রেকর্ড রয়েছে।
গত শুক্রবার দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাহোর থেকে রাজধানী ইসলামাবাদ পর্যন্ত প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই মিছিল ঐতিহাসিক গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক সড়ক থেকে শুরু হয়েছিল। পরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় দেশটির পুলিশ বিক্ষোভে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করায় একাধিক স্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ইসলামাবাদ পুলিশ বলেছে, সোমবার মুরিদকে শহরের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শত শত মানুষকে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছে পুলিশ। এ সময় টিএলপির সমর্থকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ ও ৪০টিরও বেশি যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেন। তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
পুলিশ বলেছে, নিহতদের মধ্যে পুলিশের একজন কর্মকর্তা, তিন বিক্ষোভকারী এবং এক পথচারী রয়েছেন। সংঘর্ষের উভয়পক্ষের অনেকে আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মিছিল শুরুর পর থেকে রাজধানীর প্রবেশ ও প্রস্থানপথগুলো বন্ধ থাকলেও সোমবার আংশিকভাবে তা খুলে দেওয়া হয়।
টিএলপি বলেছে, পুলিশের গুলিতেই তাদের কয়েকজন সমর্থক নিহত ও আহত হয়েছেন। সংগঠনটি বলছে, টিএলপির নেতা সাদ রিজভিও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। শরীরের তিন স্থানে আঘাত পেয়েছেন তিনি।
তবে টিএলপির এই অভিযোগের বিষয়ে প্রাদেশিক সরকারের কোনও মুখপাত্র মন্তব্য করতে রাজি হননি। এর আগে, রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে সাদ রিজভি বলেছিলেন, তাদের মিছিলের উদ্দেশ্য ছিল ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানানো। তিনি বলেন, আমাদের মিছিল ইসরাইলের বর্বরতার বিরুদ্ধে। এর আগে দলটি পাকিস্তানজুড়ে ইসরাইলি পণ্য বয়কটের ডাক দেয়। সোমবার হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে শেষ ২০ জন জীবিত ইসরাইলি পণবন্দীকে মুক্তি দিয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর শুরু হওয়া যুদ্ধের অবসানই এই যুদ্ধবিরতির লক্ষ্য।