DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

এশিয়া

ইসরাইল কথা রাখলে পণবন্দী মুক্তি

আগ্রাসন রুখতে বিশ্বব্যাপী সংহতি মিছিলের ডাক হামাসের

ফিলিস্তিনে মার্কিন-ইসরাইলী ‘জাতিগত নির্মূল’ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া জানাতে ফিলিস্তিনী প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস সপ্তাহান্তে বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভ এবং সংহতি মিছিল করার আহ্বান জানিয়েছে।

Printed Edition
5

১৩ ফেব্রুয়ারি, এএফপি, প্রেস টিভি : ফিলিস্তিনে মার্কিন-ইসরাইলী ‘জাতিগত নির্মূল’ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া জানাতে ফিলিস্তিনী প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস সপ্তাহান্তে বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভ এবং সংহতি মিছিল করার আহ্বান জানিয়েছে। গত বুধবার এক বিবৃতিতে হামাস বিশ্বজুড়ে জনগণকে রাজধানী শহরগুলোতে গণহত্যার প্রতিবাদে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। আজ শুক্রবার, গত শনিবার এবং রোববারকে গাজার নিপীড়িত জনগণের উপর শাসকগোষ্ঠীর গণহত্যার বিরুদ্ধে একটি বিশ্বব্যাপী আন্দোলন হিসেবে গড়ে তুলতে আহ্বান জানিয়েছে হামাস। হামাস বিবৃতিতে বলেছে, "আমরা, আমাদের জনগণ, আমাদের আরব ও ইসলামী জাতি এবং বিশ্বের মুক্তকামী জনগণকে শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত আমাদের ফিলিস্তিনী জনগণকে তাদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করার পরিকল্পনার" নিন্দা জানাতে বিশাল সংহতি মিছিলে বের হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।"

আন্দোলনটি বলেছে, এই বিক্ষোভগুলো ফিলিস্তিনী জনগণের ভূখণ্ড রক্ষার অবিচ্ছেদ্য অধিকার এবং তাদের স্বাধীনতা এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের প্রতি সমর্থন প্রদর্শন। ইসরাইলের ১৫ মাসের গণহত্যার সময় গাজার জনগণের পক্ষে বিশ্বব্যাপী সমর্থন এবং সংহতির জন্যও হামাস কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। গত শনিবারের মধ্যে হামাস যদি সমস্ত ইসরাইলী বন্দীকে মুক্তি না দেয়, তাহলে ইসরাইল হামাসের বিরুদ্ধে নতুন যুদ্ধ শুরু করার এবং গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনীদের বাস্তুচ্যুত করার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের হুমকি দেওয়ার দিনই এই বিবৃতি দেওয়া হল। ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় বন্দীদের মুক্তির বিষয়ে হামাস মার্কিন ও ইসরাইলী হুমকির কাছে মাথানত করবে না বলে হামাস জানিয়ে দিয়েছে। হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম বলেছেন, ইসরাইল "যুদ্ধবিরতি চুক্তির বেশ কয়েকটি ধারা বাস্তবায়ন এড়িয়ে যাচ্ছে", সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন যে, ইসরাইল চুক্তি মেনে না চললে বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে না। এদিকে, হামাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, তাদের শীর্ষ আলোচক এবং গাজা প্রধান খলিল আল-হাইয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল "কায়রোতে পৌঁছেছে এবং মিশরীয় কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক শুরু করেছে এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ করছে।

এদিকে দখলদার ইসরাইলের সঙ্গে চলমান যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যাক এমনটা চায় না ফিলিস্তিনী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। ফিলিস্তিনী একটি সূত্র জানিয়েছে, চুক্তিটি রক্ষায় কাজ করছে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো। সূত্রটি জানিয়েছে, দখলদার ইসরাইল যদি চুক্তির প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে, তাহলে আগামী শনিবার হামাস তিন পণবন্দী মুক্তি দেবে। হামাস জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি যেন সম্পূর্ণভাবে কার্যকর করা যায়, সেটি নিশ্চিতে ইসরাইলের ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করছে মধ্যস্থতাকারীরা। যারমধ্যে রয়েছে, মানবিক চুক্তিগুলো পুরোপুরি মানার বিষয়টি। দখলদার ইসরাইলের সঙ্গে গত ১৯ জানুয়ারি হামাসের যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। ওই সময় তাদের মধ্যে চুক্তি হয়, জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার পাশাপাশি গাজায় বিপুল পরিমাণ ত্রাণ ও ভারী সরঞ্জাম প্রবেশে কোনো বাধা দেওয়া হবে না। তবে দখলদাররা তাদের কথা রাখেনি। চুক্তি অনুযায়ী, যে পরিমাণ ত্রাণ পৌঁছানোর কথা ছিল, সেগুলো আসেনি। এছাড়া ধ্বংসস্তূপ সরানোর জন্য গাজায় ভারী সরঞ্জাম প্রবেশের কথা ছিল। যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর প্রায় এক মাস হয়ে গেলেও এখনো এ ধরনের কোনো যন্ত্র গাজায় ঢোকেনি। এমনকি গাজায় আরও শতাধিক মানুষকে হত্যা করেছে ইসরাইলী সেনারা।

চুক্তি লঙ্ঘনের জেরে গত সোমবার হামাস ঘোষণা দেয়, তারা শনিবার পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী জিম্মিদের মুক্তি দেবে না। তাদের এ ঘোষণার পর যুদ্ধবিরতিটি ভেস্তে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়। তবে এটি যেন ভেস্তে না যায় সেজন্য কাজ শুরু করে মধ্যস্থতাকারীরা। একটি সূত্র বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, মধ্যস্থতাকারীরা ইসরাইলের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়েছেন, ইসরাইল আজ বৃহস্পতিবার থেকে একটি নতুন মানবিক প্রটোকল শুরু করবে। অপর একটি সূত্র বলেছে, “হামাস মিসরের কর্মকর্তাদের কাছে নিশ্চিত করেছেন, শনিবার ষষ্ঠ জিম্মি বিনিময় হবে যদি ইসরাইল তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে।” প্রথম সূত্রটি জানিয়েছে, ইসরাইল প্রতিশ্রুতি রক্ষার ব্যাপারে কথা দিলেই অস্থায়ী বাড়ির অংশ, তাঁবু, জ্বালানি, ভারী যন্ত্রপাতি, ওষুধ এবং হাসপাতাল সংস্কারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গাজায় প্রবেশ করা শুরু করবে।