যুক্তরাষ্ট্রের মহড়া নিয়ে উত্তর কোরিয়ার হুঁশিয়ারি
উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের বোন কিম ইয়ো জং বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের আসন্ন যৌথ সামরিক মহড়া একটি ‘বেপরোয়া শক্তি প্রদর্শন’ যা পরিস্থিতি আরো ‘খারাপ পরিণতি’র দিকে নিয়ে যাবে। রবিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে।যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ার জেজু দ্বীপ উপকূলে যৌথ সামরিক মহড়া চালাবে। এতে নৌ, বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা মহড়া অন্তর্ভুক্ত থাকবে। লক্ষ্য হলো পারমাণবিক অস্ত্রধারী উত্তর কোরিয়ার হুমকির মোকাবেলায় প্রস্তুতি জোরদার করা।এ লক্ষ্যে ওয়াশিংটন দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রায় ২৮ হাজার ৫০০ মার্কিন সেনা মোতায়েন করেছে। এ দুই দেশ নিজেদের সেনা ও অস্ত্র একত্রে ব্যবহার করে একটি টেবিলটপ সামরিক মহড়াও চালাবে।কিম ইয়ো জং রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএতে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই মহড়াকে ‘বিপজ্জনক ভাবনা’ বলে সমালোচনা করেছেন। উত্তর কোরিয়ার সংক্ষিপ্ত নাম ব্যবহার করে তিনি বলেন, ‘আমাদের সীমান্ত ঘেঁষে তাদের (মিত্রদের) এই বেপরোয়া শক্তি প্রদর্শন ভুল জায়গায় করা হচ্ছে, এটা অনিবার্যভাবে তাদের নিজেদের জন্য খারাপ পরিণতি বয়ে আনবে।’পিয়ংইয়ং দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ মহড়াকে আক্রমণের মহড়া বলে নিন্দা জানিয়ে আসছে। কিম ইয়ো জংয়ের এই বিবৃতি তার ভাইয়ের এই সপ্তাহে একটি অস্ত্র গবেষণা কেন্দ্র পরিদর্শনের পর এসেছে। সেখানে তিনি বলেছেন, পিয়ংইয়ং ‘পারমাণবিক ও প্রচলিত সামরিক শক্তি একসঙ্গে গড়ে তোলার নীতি চালিয়ে যাবে।২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর থেকে উত্তর কোরিয়া ঘোষণা দিয়েছে, তারা কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করবে না। দেশটি নিজেকে একটি ‘অনড়’ পারমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেছে।ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কিম জং উন আরো সাহসী হয়ে উঠেছেন। হাজার হাজার উত্তর কোরীয় সৈন্যকে মস্কোর পক্ষে যুদ্ধ করার জন্য পাঠিয়ে রাশিয়ার কাছ থেকে তিনি কৌশলগত সমর্থন নিশ্চিত করেছেন। গত বছর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যখন উত্তর কোরিয়া সফর করেন, তখন একটি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করে মস্কো ও পিয়ংইয়ং। আল-জাজিরা, রয়টার্স।
ইসরাইলকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে গাজার পথে ছুটল জাহাজগুলো
ইসরায়েলি অবরোধ ভাঙতে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে গ্লোবাল সমুদ ফ্লোটিলার জাহাজগুলো। গত শনিবার তিউনিসিয়ার বিজের্ত বন্দর এবং ইতালির সিসিলি দ্বীপের অগাস্টা বন্দর থেকে এ বহরের জাহাজগুলো যাত্রা করে। আয়োজকদের শেয়ার করা এক ভিডিওতে দেখা যায়, প্রথম সহায়তা জাহাজটি তিউনিসিয়া থেকে গাজার উদ্দেশে যাত্রা করে। এ সময় কর্মী ও সাংবাদিকরা, যার মধ্যে আনাদোলুর একজন সংবাদদাতাও ছিলেন, যাত্রার মুহূর্তটি ধারণ করেন।ইতালির বহরের ১৮টি নৌযান সপ্তাহব্যাপী প্রস্তুতি শেষে শনিবার অগাস্টা বন্দর থেকে রওনা হয়। আয়োজকদের বরাতে বলা হয়, এগুলো তিউনিসিয়া থেকে ছাড়তে যাওয়া অন্য জাহাজগুলোর সঙ্গে আগামী সপ্তাহে সমুদ্রে মিলিত হবে। এর মধ্যে বার্সেলোনা থেকে ছাড়ার পরবর্তী বহরও থাকবে। ইতালির প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (পিডি) এমপি আরতুরো স্কোত্তো ও ইউরোপীয় সংসদ সদস্য আনালিসা কোরাডোসহ বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এই যাত্রায় অংশ নিয়েছেন। আয়োজকদের তথ্যানুযায়ী, রবিবার তিউনিসিয়া ও গ্রিস থেকেও আরও কিছু নৌযান গাজার উদ্দেশে রওনা হবে। সেগুলো আন্তর্জাতিক জলসীমায় মিলিত হয়ে ‘গাজার পথে সবচেয়ে বড় নৌ-মিশন’-এ পরিণত হবে। প্রায় ৫০টি জাহাজ নিয়ে গঠিত এই ফ্লোটিলায় ৪৫টিরও বেশি দেশের ৫০০ থেকে ৭০০ কর্মী অংশ নিয়েছেন। তাদের মধ্যে আছেন শিল্পী, এমপি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা। আয়োজকরা জানান, ফ্লোটিলার মূল উদ্দেশ্য হলো ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধকে চ্যালেঞ্জ করা এবং গাজায় মানবিক করিডর খুলে দেওয়া, যেখানে চলমান অবরোধ ও ত্রাণ বন্ধ থাকায় দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অব্যাহত আগ্রাসনে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৮০০’রও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ভয়াবহ এই সামরিক অভিযান গাজার অবকাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে এবং অঞ্চলটিকে দুর্ভিক্ষের মুখে ঠেলে দিয়েছে।গত নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া গাজায় চালানো ইসরায়েলের যুদ্ধকে গণহত্যা হিসেবে অভিযুক্ত করে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) মামলা চলছে। আনাদোলু এজেন্সি