আল জাজিরা : গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা চলাকালে অস্ত্রত্যাগের বিষয়ে সম্মতি জানানোর খবরের বিরোধিতা করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তারা বলেছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি দখলদারি মোকাবিলার জাতীয় ও আইনি অধিকার তাদের রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজায় আটক থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের স্বজনদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে উইটকফ তাঁদের বলেন, হামাস জানিয়েছে, তারা ‘নিরস্ত্রীকরণে প্রস্তুত’। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ এটা ফলাও করে প্রচার করেছে। মার্কিন দূতের এমন মন্তব্য সংবাদমাধ্যমে প্রচারের পর গতকাল শনিবার এর তীব্র বিরোধিতা করে হামাস। এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, যতক্ষণ (ইসরায়েলি) দখলদারি বহাল থাকবে, ততক্ষণ তা প্রতিরোধ করা এবং সেটার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরা তাদের জাতীয় ও আইনি অধিকার। ‘(ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড) পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত (দখলদারির বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরা) আমাদের পূর্ণ জাতীয় অধিকার। এর মধ্যে প্রধান হলো, জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি সম্পূর্ণ সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। এ অধিকার ত্যাগ করা যাবে না’, বলেছে হামাস।
স্টিভ উইটকফ গতকাল ইসরায়েলের তেল আবিবে পণবন্দিদের স্বজনদের সঙ্গে দেখা করেন। এর এক দিন আগে তিনি গাজায় গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল–সমর্থিত ‘বিতর্কিত’ সংস্থা জিএইচএফ পরিচালিত ত্রাণ সরবরাহ কেন্দ্র ঘুরে দেখেন। গাজার এখনকার অপুষ্টিজনিত সংকটময় পরিস্থিতিতে স্টিভ উইটকফের এ সফরকে ‘সাজানো অনুষ্ঠান’ বলে সমালোচনা করেছে হামাস। গত সপ্তাহে জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত মে মাসে জিএইচএফ ত্রাণকেন্দ্র পরিচালনা শুরু করার পর থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৩০০–এর বেশি ফিলিস্তিনি ত্রাণ নিতে গিয়ে হামলায় নিহত হয়েছেন। গাজায় হত্যাকাণ্ড আর জিএইচএফের কার্যক্রমের ক্রমবর্ধমান সমালোচনা সত্ত্বেও ট্রাম্প প্রশাসন দৃঢ়ভাবে এ সংস্থার পাশে দাঁড়িয়েছে। গত জুনে ওয়াশিংটন জিএইচএফের জন্য ৩০ মিলিয়ন (৩ কোটি) ডলার তহবিল অনুমোদনের কথা জানিয়েছে। একদিকে গাজায় দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি, অন্যদিকে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে হামাসের নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে ওই মন্তব্য করেছেন স্টিভ উইটকফ।