সিএমজি : অনেক দেশের মতো চীনেও এখন বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। আর এই খরতাপই জন্ম দিয়েছে এক নতুন পর্যটনে, ‘রাতের পর্যটন’। সূর্য ডোবার পর ঘোরাঘুরিতে উৎসাহী হয়ে উঠেছেন চীনা ও সেখানে বেড়াতে আসা বিদেশিরা। এতে চীনের গ্রীষ্মকালীন অর্থনীতিতে যোগ হয়েছে নতুন গতি।
হুনান প্রদেশের চাংচিয়াচিয়ের বিখ্যাত থিয়ানমেন পর্বত এখন রাতের বেলায় রঙিন আলোয় ঝকমকে এক দৃশ্যপটে রূপ নিয়েছে। বিখ্যাত ৯৯৯ ধাপের সিঁড়িটি হয়ে উঠেছে রাতের সৌন্দর্যের কেন্দ্র।
মেক্সিকোর পর্যটক মাউরিসিও বলেন, ‘গরম থেকে বাঁচতে বিকেলে এসেছিলাম, কিন্তু রাতে এমন অভাবনীয় দৃশ্য দেখব ভাবিনি।’
পার্ক কর্মকর্তা তিং ইয়ুনচুয়ান জানালেন, গ্রীষ্মের দুপুরে তীব্র রোদের কারণে দর্শনার্থীরা বিকেল গড়িয়ে রওনা হন, কেউ কেউ রাত ৯টা পর্যন্ত থাকেন। তাই সন্ধ্যার জন্য বিশেষ আলো প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এ বছর গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে দিনে প্রায় ২০ হাজার মানুষ ভিড় করছেন এই পার্কে। গোটা চীনজুড়েই রাতের অর্থনীতির প্রসারে নীতিগত উদ্যোগ নিয়েছে চীন সরকার। গত জানুয়ারিতে রাতের সংস্কৃতি ও পর্যটন প্রসারে একটি নীতিপত্রও প্রকাশ করেছে স্টেট কাউন্সিল।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন চীনের ৬০ শতাংশ ভোক্তা ব্যয় হচ্ছে রাতে। এমনকি রাতের পর্যটনে মাথাপিছু ব্যয় দিনের তুলনায় তিনগুণ বেশি। ২০২৪ সালে রাতের পর্যটনে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১.৯১ ট্রিলিয়ন ইউয়ান।
ছাংশা শহরে রাতের শো, স্ট্রিট ফুড, সংগীত ও আতশবাজির আয়োজন চলে রাত ১২টা পর্যন্ত। থাং রাজবংশের সংস্কৃতি নিয়ে নির্মিত থিম পার্কেও রাতের দর্শনার্থীর জুলাই থেকে প্রায় ২০ শতাংশ বেড়েছে।
কমেডি থিয়েটারগুলোয় দেদার চলছে রাতের শো। ছাংশার ‘লাফ ফ্যাক্টরি’ থিয়েটারে প্রতিদিন চলছে চীনা ক্রসটক আর হিপ-হপের মিশেলে হাসির অনুষ্ঠান।
শহরের পর্যটন বিভাগের কর্মকর্তা চাং লিং জানান, রাতের থিয়েটার, খাবার ও আলোকসজ্জা মিলিয়ে নতুন একটি থিম রুট চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। এর মাধ্যমে রাতের জীবন হবে আরও প্রাণবন্ত, বাড়বে অর্থনৈতিক গতি।