সৌদি আরবের সঙ্গে ১০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের একটি বিশাল অস্ত্রচুক্তির ঘোষণা দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী মে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সৌদি সফরকালে এই চুক্তির ঘোষণা আসতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ছয়টি সূত্র। পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সৌদির সঙ্গে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি চূড়ান্ত করতে চাইলেও সফল হননি। সেই প্রস্তাবে চীনের কাছ থেকে অস্ত্র কেনা বন্ধ করা এবং চীনা বিনিয়োগ সীমিত করার শর্তে উন্নত মার্কিন অস্ত্র সরবরাহের কথা ছিল। তবে ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাবেও এমন কোনো শর্ত আছে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বে আমাদের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী হয়েছে। সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা চাহিদা পূরণে আমরা একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব।’ প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প সৌদির কাছে অস্ত্র বিক্রিকে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মসংস্থানের জন্য ইতিবাচক বলে প্রচার করেছিলেন। এই চুক্তির আওতায় সৌদি আরব বিভিন্ন ধরনের উন্নত অস্ত্র পেতে পারে। এর মধ্যে আছে সি-১৩০ পরিবহন বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র, রাডার এবং ড্রোন। এসব সরবরাহ করবে লকহিড মার্টিন, আরটিএক্স (পূর্বে রেথিয়ন), বোয়িং, নর্থরপ গ্রুম্যান এবং জেনারেল অ্যাটমিক্সের মতো বড় বড় মার্কিন অস্ত্র প্রস্তুতকারক কোম্পানি। সূত্রগুলো জানায়, জেনারেল অ্যাটমিক্সের ড্রোন কেনার আলোচনা ২০১৮ সাল থেকেই চলছিল। গত এক বছরে ২০ বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি সামনে এসেছে, যাতে এমকিউ-৯বি সিগার্ডিয়ান ধরনের ড্রোন ও অন্যান্য বিমান অন্তর্ভুক্ত। তিনটি সূত্র জানায়, মার্কিন অস্ত্র কোম্পানির অনেক নির্বাহী ট্রাম্পের সফরসঙ্গী হিসেবে সৌদিতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সৌদির সঙ্গে ১১০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্রচুক্তির ঘোষণা দেন। তবে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মাত্র ১৪.৫ বিলিয়ন ডলারের সরবরাহ শুরু হয়েছিল। এরপর মার্কিন কংগ্রেস চুক্তিগুলো নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

২০২১ সালে বাইডেন প্রশাসন সৌদির কাছে আক্রমণাত্মক অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। তবে ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর বিশ্বজুড়ে জ্বালানির সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়, তখন থেকে যুক্তরাষ্ট্র সৌদির সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে শুরু করে।

২০২৪ সালে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। সূত্রগুলো জানিয়েছে, সৌদি আরব বহুদিন ধরেই লকহিড মার্টিনের তৈরি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান চায়। এই সফরে সেই প্রসঙ্গ ওঠার সম্ভাবনা থাকলেও, সফরেই চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছে তারা। যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই নিশ্চিত করে যে ইসরাইল যেন আরব দেশগুলোর চেয়ে উন্নততর মার্কিন অস্ত্র পায়, একে বলা হয় ‘কোয়ালিটেটিভ মিলিটারি এজ’ বা কিউএমই। ইসরাইল গত ৯ বছর ধরে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করছে এবং ইতিমধ্যেই একাধিক স্কোয়াড্রন গঠন করেছে।