দায়িত্ব গ্রহণের ২৭ দিনের মাথায় প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে লেকোর্নো সরে দাঁড়ানোয় রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় টালমাটাল ফ্রান্স। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ দেবেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন এবং দপ্তর এলিসি প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বুধবার রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, অধিকাংশ আইনপ্রণেতা পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার বিপক্ষে। তারা স্থিতিশীলতা চান। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন একটি বাজেট গৃহীত হওয়ার কথা আছে। সেজন্য সবার আগে প্রয়োজন পার্লামেন্টে স্থিতিশীলতা।

তাই সবদিক বিবেচনা করে প্রেসিডেন্ট একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এ সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন হবে।

গত ৬ অক্টোবর পদত্যাগ করেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী সেবাস্টিয়ান লেকোর্নো। ম্যাক্রোঁর বিশ্বস্ত অনুসারী হিসেবে পরিচিত এই রাজনীতিবিদ এখন দেশটির তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকায় আছেন। নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ পেলে বিদায় নেবেন তিনি।

সম্প্রতি জাতীয় বাজেট কাটছাঁট নিয়ে সরকারে প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে ফ্রান্সের জনগণ ও বিরোধী দলগুলো। ঋণের দেনায় জর্জরিত ফ্রান্সের সরকারে স্বস্তি দিতে গত সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে কল্যাণমূলক ও জনস্বার্থ সম্পর্কিত বিভিন্ন খাত থেকে সরকারি বরাদ্দের অর্থ কাটছাঁট করার একটি প্রস্তাব পাস করে ফ্রান্সের মন্ত্রিসভা; পাস হওয়া সেই প্রস্তাব অনুযায়ী বাজেট সংস্কারের অংশ হিসেবে বিভিন্ন খাত থেকে রাষ্ট্রীয় বরাদ্দের মোট ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলার ছেঁটে ফেলা হয়।

এতে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হন ফ্রান্সের সাধারণ জনগণ। জনগণের ক্ষোভকে আমলে নিয়ে পার্লামেন্টে লেকোর্নোর পূর্বসূরী প্রধানমন্ত্রী ফাঙ্কোইস বায়রোকে আস্থাভোটের চ্যালেঞ্জ জানান বিরোধী দলীয় এমপিরা। সেই ভোটে হেরে গিয়ে ৮ সেপ্টেম্বর বিদায় নেন বায়রো। তার বিদায়ের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লেকোর্নোকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন ম্যাক্রোঁ।

কিন্তু লেকোর্নো আসার পরও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। ফ্রান্সের কট্টর বামপন্থি রাজনৈতিক দল ও ট্রেড ইউনিয়নগুলো একের পর এক কর্মসূচি ঘোষণা করে যাচ্ছিল। ফলে দায়িত্ব গ্রহণের ২৭ দিনের এবং মন্ত্রিসভা গঠনের ১৪ ঘণ্টার মাথায় প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান লেকোর্নো।