ইসরায়েলজুড়ে গাজা যুদ্ধ বন্ধ ও হামাসের হাতে আটক সব জিম্মিকে দ্রুত মুক্ত করার দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ ও ধর্মঘট চলছে।
সোমবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলনে সাধারণ মানুষ, জিম্মিদের পরিবার, নিহতদের স্বজন, শিক্ষাবিদ, সামাজিক সংগঠন ও বিরোধী রাজনৈতিক গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।
সকাল ৬টা ২৯ মিনিটে দেশব্যাপী কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। সময়টি প্রতীকী, কারণ ঠিক এই সময়েই গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছিল। উত্তর দান থেকে শুরু করে দক্ষিণের এলিয়াত পর্যন্ত প্রায় ৩০০ স্থানে একযোগে বিক্ষোভ হয়। মহাসড়ক, শহরের প্রবেশপথ, মোড় ও গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক পয়েন্টে অবস্থান কর্মসূচি, মিছিল ও মানববন্ধন হয়েছে।
তেল আবিবের হোস্টেজ স্কোয়ারে আন্দোলনের কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। এখানে জিম্মিদের স্বজন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, মানবাধিকারকর্মী ও শিক্ষাবিদরা বক্তব্য রাখছেন। সকালেই আরলোসরফ ট্রেন স্টেশন থেকে একটি বিশাল মিছিল স্কোয়ারে এসে যোগ দেয়।
এ সময় ‘হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম’ নামে সংগঠন সাধারণ মানুষের সঙ্গে জিম্মিদের পরিবারের সরাসরি সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে। সকাল ৭টায় জিম্মিদের স্বজনরা গণমাধ্যমের সামনে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য রাখেন।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে শত শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের স্বেচ্ছায় কাজে না যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। যদিও জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন হিস্টাড্রুট আনুষ্ঠানিক ধর্মঘট ডাকেনি, তবে তাদের সদস্যদের ব্যক্তিগতভাবে অংশ নেওয়ার স্বাধীনতা দিয়েছে। এ পর্যন্ত অন্তত ৯০টি পৌরসভা আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।
ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, তারা দেশজুড়ে হাজারো পুলিশ ও সীমান্ত রক্ষী মোতায়েন করেছে। তবে সতর্ক করে দিয়েছে— কেউ যদি আগুন জ্বালানো, রাস্তা অবরোধ বা সহিংসতার চেষ্টা করে, তবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবি হলো— গাজা যুদ্ধ বন্ধ করা, জিম্মিদের জীবিত অবস্থায় ফিরিয়ে আনা, ৭ অক্টোবরের ব্যর্থতা নিয়ে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন
আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট করে বলেছেন, এই আন্দোলন রাজনৈতিক নয়। তারা বলছেন, আমাদের একটাই দাবি— যুদ্ধ থামাও, জিম্মিদের ফেরাও।
কয়েক মাস ধরে চলা গাজা যুদ্ধে এখনো বহু জিম্মির খোঁজ মিলছে না। এতে জনগণের ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে। বিশেষ করে যেসব পরিবার প্রিয়জনদের মুক্তির অপেক্ষায় দিন গুনছে, তাদের চাপের মুখে ইসরায়েল সরকার নতুন সংকটে পড়েছে।
তেল আবিব, হাইফা, জেরুজালেম, বিয়ারশেভা, আশদোদসহ প্রধান শহরগুলোতে বিক্ষোভ সবচেয়ে বেশি তীব্র আকার ধারণ করেছে।
সূত্র: অনলাইন হারেৎজ