দ্য গার্ডিয়ান: নিউজিল্যান্ডের নাগরিকরা ব্যাপকহারে নিজ দেশ ছাড়ায় বিদেশি কর্মীদের বসবাসের নিয়ম সহজ করছে নিউজিল্যান্ড সরকার। মানুষজন চলে যাওয়ায় অর্থনীতি ও কর্মক্ষেত্রে যে সংকট তৈরি হয়েছে, তা দূর করতে দেশটির সরকার এই নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে। নিউজিল্যান্ডের অর্থনৈতিক উন্নয়নমন্ত্রী নিকোলা উইলিস গতকাল মঙ্গলবার এ ব্যাপারে বলেছেন, “ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের বারবার বলছে যে যোগ্য ও দক্ষ বিদেশি কর্মীদের নিউজিল্যান্ডে বসবাসের সুযোগ পাচ্ছেন না। তাদের জন্য বসবাসের অনুমোদন কঠিন হয়ে যাচ্ছে। অথচ তাদের দক্ষ কর্মী আমাদের অনেক বেশি প্রয়োজন।” বিদেশিদের বসবাস সহজ করতে ২০২৬ সাল থেকে নতুন দুটি নিয়ম চালু করবে নিউজিল্যান্ড। এগুলো ওই বছরের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর হবে। দুটি নিয়মে একটি হলো দক্ষ শ্রমিকদের জন্য। দ্বিতীয়টি হলো কারিগরি পেশার কর্মীদের জন্য। দক্ষ কর্মীদের যে নিয়ম ও শর্ত পূরণ করতে হবে: এই নিয়মটি এমন দক্ষ কর্মীদের জন্য যারা নির্দিষ্ট পেশায় কাজ করেন এবং যাদের অভিজ্ঞতা ও বেতন এই শর্তগুলো পূরণ করে
কাজের অভিজ্ঞতা: কমপক্ষে পাঁচ বছরের প্রাসঙ্গিক কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এর মধ্যে অন্তত দুই বছর নিউজিল্যান্ডে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
বেতন: নিউজিল্যান্ডে কাজ করার সময় প্রতি ঘণ্টায় দেশটির গড় বেতনের চেয়ে ১ দশমিক ১ গুণ বেশি বেতন পেতে হবে। কারিগরি পেশার কর্মীদের জন্য যে নিয়ম ও শর্ত পূরণ করতে হবে এই নিয়মটি মূলত টেকনিশিয়ান, ইলেকট্রিশিয়ান, প্লাম্বারসহ অন্যান্য কারিগরি কাজে অভিজ্ঞ কর্মীদের জন্য। বসবাসের অনুপতি পেতে হলে তাদের নিচের শর্তগুলো পূরণ করতে হবে
যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: একটি লেভেল ৪ বা তার বেশি যোগ্যতার সার্টিফিকেট এবং কমপক্ষে চার বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এর মধ্যে অন্তত ১৮ মাস নিউজিল্যান্ডে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
বেতন: নিউজিল্যান্ডে কাজ করার সময় প্রতি ঘণ্টায় দেশের গড় বেতনের সমান বা তার বেশি বেতন পেতে হবে। নিউজিল্যান্ডের অভিবাসন মন্ত্রী এরিকা স্ট্যানফোর্ড বলেন, “এই নতুন নিয়মগুলো এমন অভিজ্ঞ কর্মীদের ধরে রাখতে সাহায্য করবে যারা এরই মধ্যে নিউজিল্যান্ডের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন।” তিনি আরও বলেন, “কারিগরি পেশার কর্মীদের জন্য নতুন নিয়মটি এমন সব ব্যবহারিক দক্ষতার স্বীকৃতি দেবে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির মতো গুরুত্বপূর্ণ।” নিউজিল্যান্ড ছাড়ছেন দেশটির নাগরিকরাই: ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত ৭৩ হাজার ৪০০ জন নিজ দেশ ছেড়েছেন, আর ফিরে এসেছেন মাত্র ২৫ হাজার ৮০০ জন। এদিকে দেশটির অন্যতম বিরোধী দল ‘নিউজিল্যান্ড ফার্স্ট’ নতুন নিয়মগুলোর বিরোধিতা করেছে। দলের নেতা উইনস্টন পিটার্স বলেন, “নিউজিল্যান্ডকে এখন অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার পথ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।