মিডল ইস্ট আই : ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস গত সোমবার মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। তার মৃত্যুতে শোকাহত পুরো বিশ্ব। শোক পালন করছেন ইসরাইলী আগ্রাসনে বিধ্বস্ত গাজাবাসীরাও। পোপের মৃত্যুতে নিস্তব্ধ হয়ে গেছে গাজার গির্জাগুলো। ফিলিস্তিনী নাগরিক করিমা তারাজি বলেন, এই সপ্তাহের শুরুতে পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর পর গাজার গির্জাগুলো নীরব হয়ে গেছে। ইসরাইলী আগ্রাসন শুরুর পর অন্যান্যদের মতো গত ১৮ মাস ধরে গাজার দুটি গির্জা-হলি ফ্যামিলি চার্চ এবং সেন্ট পোরফাইরিয়াস গ্রীক অর্থোডক্স- এ বাস করছেন ফিলিস্তিনীরা। সেখানে আশ্রয় নিয়েছে গাজায় থাকা তারাজি পরিবার।

৬৩ বছর বয়সি এই ফিলিস্তিনী নিউ জার্সির নিউয়ার্কের ক্যাথেড্রাল ব্যাসিলিকা অফ দ্য সেক্রেড হার্টে মিডল ইস্ট আই-এর সঙ্গে কথা বলেছেন। সেখানে গত মঙ্গলবার পোপের জন্য প্রার্থনা করা হয়। তিনি বলেন, ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরাইলী বোমা হামলায় তার পরিবারের বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে যায়। তার আত্মীয়স্বজনরা তখন থেকে দুটি গির্জায় আশ্রয় নিয়েছে। সে মাসের শুরুতেই সেন্ট পোরফাইরিয়াস গির্জায় ইসরাইলী বোমা হামলায় তার পরিবারের ১৭ জন সদস্য নিহত হন।

গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই প্রতিনিয়ত গির্জাগুলোতে ফোন করে খোঁজ নিতেন পোপ। কঠিন এ সময়ে পোপের প্রতিদিনের ফোনকল কেবল স্বস্তিই দেয়নি; বরং তাদের বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণাও দিয়েছিল। তারাজি মিডল ইস্ট আইকে বলেন, ‘গত দেড় বছরে এমন একটি দিনও যায়নি যখন আমার পরিবার যারা সেন্ট পোরফিরিয়াসে বাস করে, তারা ঠিক আছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য তার (পোপ) কাছ থেকে কোনও ফোন পায়নি।’ তিনি বলেন, ‘আজ সকালে, আমি আমার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি, এবং তারা বলেছে, ‘‘আজ একটা নীরবতা ছিল। আমরা তার কণ্ঠস্বর শুনতে পাইনি’’। ’

ফিলিস্তিনী অধিকারের সমর্থক: বিশ্বের অন্যান্য গির্জার মতো মঙ্গলবার নিউ জার্সির নিউয়ার্কের ক্যাথেড্রাল ব্যাসিলিকা অফ দ্য সেক্রেড হার্টে পোপের জন্য প্রার্থনার আয়োজন করেছিল। গির্জার কর্মকর্তারা মিডল ইস্ট জানিয়েছে, প্রায় দুই হাজার মানুষ পোপের জন্য শ্রদ্ধা জানাতে এবং প্রার্থনা করতে বিশেষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তারাজি বলেন, পোপ ফ্রান্সিস কেবল ফিলিস্তিনী অধিকারের একজন সমর্থক ছিলেন না বরং নীতিবান এবং সাহসী ব্যক্তি ছিলেন।

তার মৃত্যুতে বিশ্বের ১.৪ বিলিয়ন ক্যাথলিকরা শোকাহত। ফিলিস্তিনী খ্রিস্টানরা তার মৃত্যুতে ‘অত্যন্ত দুর্বল’ বোধ করছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় গণহত্যামূলক অভিযান শুরুর পর থেকে পোপ ফ্রান্সিস নিয়মিতভাবে ইসরাইলের নিন্দা করেছেন।