ইন্টারনেট : নতুন পেনশন সংস্কার আইনের প্রতিবাদে ফ্রান্সে ব্যাপক সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ‘ব্লক এভরিথিং’ নামে শুরু হওয়া আন্দোলন থেকে প্রায় ৩০০ বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর ডাকা এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে রাস্তা, রেললাইন এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবন অবরোধ করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে ৮০,০০০ পুলিশ ও নিরাপত্তা সদস্য।

সম্প্রতি পেনশন সংস্কার আইন পাশ করে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সরকার। যেখানে অবসরের বয়স ৬২ থেকে বাড়িয়ে ৬৪ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত সারা দেশের শ্রমিক, ছাত্র এবং বিরোধী দলগুলোর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করে। এই আইন শ্রমজীবীদের অধিকার খর্ব করবে এবং কর্মজীবনের চাপ বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করছে প্রতিবাদকারীরা। গত বুধবার প্রতিবাদের অংশ হিসেবে বিভিন্ন শহরে রাস্তা, সেতু এবং গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেয় বিক্ষোভকারীরা। প্যারিস, মার্সেই, লিয়োঁ এবং অন্যান্য বড় শহরের কেন্দ্রগুলোতে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। টায়ার জ্বালিয়ে, আবর্জনা স্তূপ করে এবং পুলিশের সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তারা। কিছু স্থানে দোকানপাট ও সরকারি ভবনে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ টিয়ার গ্যাস, জল কামান এবং রাবার বুলেট ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করেছে। সহিংসতা কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। শ্রমিক ইউনিয়নগুলো সরকারের এই দমন-পীড়নের তীব্র নিন্দা জানিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলে, যদি সরকার এই আইন প্রত্যাহার না করে, তাহলে আন্দোলন আরও জোরালো হবে। আগামী দিনে আরও বড় কর্মসূচির ঘোষণার সতর্ক করে তারা।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ফ্রান্সে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। সেই সাথে পরিস্থি আরও অস্থিতিশীল করে তুলেছে এ আন্দোলন। যা সরকারের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর পদত্যাগ চায় বিক্ষোভকারীরা। আস্থাভোটে হেরে ফ্রাঁসোয়া বায়রু প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর সেবাস্টিয়েন লেকর্নুকে নতুন প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ। তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে এক হয়েছে ফ্রান্সের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো।