বিবিসি ,এপি : পর্তুগালে শ্রম আইনের প্রস্তাবিত সংস্কারের প্রতিবাদে গত শনিবার রাজধানী লিসবনে বিক্ষোভে নেমেছেন লাখো মানুষ। তাদের অভিযোগ, প্রস্তাবিত বিধিমালা বরং শ্রমিকদের অধিকারকে হুমকির মুখে ফেলবে। সংস্কার প্রস্তাবনায় রয়েছে, নিয়োগদাতাদের জন্য কর্মী ছাঁটাই সহজ করা, আউটসোর্সিংয়ের সুযোগ বৃদ্ধি, কয়েক ধরনের ছুটির সুযোগ সীমিত করা— যার মধ্যে রয়েছে গর্ভপাতের পর নারীদের মানসিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার ছুটি কমিয়ে দেওয়া।
প্রস্তাবিত বিলটি পর্তুগিজ পার্লামেন্টে ডানপন্থি চেগা দলের সমর্থনে পাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারের দাবি, এই পদক্ষেপগুলো কর্মক্ষেত্রে নমনীয়তা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করবে, যা পশ্চিম ইউরোপের তুলনামূলক দরিদ্র দেশ পর্তুগালের জন্য জরুরি। তবে পর্তুগালের সবচেয়ে বড় শ্রমিক ইউনিয়ন সিজিটিপির প্রধান প্রস্তাবিত সংস্কারকে ‘শ্রমিকদের বিরুদ্ধে বৃহত্তম আক্রমণ’ বলে অভিহিত করেছেন এবং ১১ ডিসেম্বর সাধারণ ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছেন।
গত শনিবারের জমায়েত সম্পর্কে সিজিটিপি জানিয়েছে, প্রায় এক লাখ মানুষ লিসবনের প্রধান সড়কে সমবেত হয়েছিল। মার্কিন বার্তাসংস্থা এপি জানায়, সেখানে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী উপস্থিত ছিলেন, যদিও পুলিশ কোনো আনুষ্ঠানিক সংখ্যা প্রকাশ করেনি। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ৩১ বছর বয়সি চিকিৎসা সরঞ্জাম কর্মী মিরিয়াম আলভেস বলেন, নতুন আইন পাস হলে আমাদের কাজের পরিবেশকে অনেকটা পিছিয়ে দেবে এবং কর্মসংস্থানের নিরাপত্তাকে পুরোপুরি ধ্বংস করবে।
আরেক বিক্ষোভকারী, ৩৪ বছর বয়সি আর্কাইভ কর্মী মাডালেনা পেনা বলেন, সরকার নির্বাচনের আগে কিছু না জানিয়ে এখন কৌশলে শ্রম অধিকারে আঘাত করছে। ইউনিয়ন নেতা তিয়াগো অলিভেইরা বলেন, এই পরিবর্তন কার্যকর হলে তা আমাদের প্রত্যেকের জীবনের মান নিম্নমুখী করবে। এছাড়া, বিক্ষোভকারীরা বেতন বৃদ্ধির দাবিও তুলেছেন। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর পর্তুগালের অর্ধেকের বেশি শ্রমিকের মাসিক আয় ছিল এক হাজার ইউরোর (এক হাজার ১৫৫ মার্কিন ডলার) কম। আর দেশটিতে ন্যূনতম মজুরি মাত্র ৮৭০ ইউরো (এক হাজার ৬ ডলার)।