বিশ্বব্যাপী অস্থিরতা ও বৈদেশিক সহায়তার পরিমাণ হ্রাসের প্রেক্ষাপটে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) প্রধান হাওলিয়াং জু।

রোববার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে শান্তি, নিরাপত্তা এবং উন্নয়নের মধ্যে যোগসূত্র আরও স্পষ্ট। এই অবস্থায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিনিয়োগ এখন সময়ের দাবি।”

স্পেনের সেভিল শহরে সোমবার শুরু হতে যাওয়া চার দিনের জাতিসংঘ সম্মেলনের প্রাক্কালে বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জু বলেন, সহায়তা, বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় কোনো ‘জিরো-সাম গেইম’ নয়, বরং প্রতিটি খাত একে অপরের সঙ্গে জড়িত।

তিনি বলেন, “বিশ্বের দরিদ্রতম জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশ বসবাস করছে সংঘাতপীড়িত অঞ্চলে। তাই সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠার ভিত্তি গড়ে তুলতে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

ইউএনডিপি প্রধান উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, উন্নত দেশগুলো—বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো—সাহায্যের বাজেট কাটছাঁট করে প্রতিরক্ষা ব্যয় কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। ইউক্রেন এবং মধ্যপ্রাচ্যে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

তার ভাষায়, “২০২৪ সালে বিশ্বজুড়ে সামরিক ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২.৭ ট্রিলিয়ন ডলারে, যা আগের বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি।”

হাওলিয়াং জু আরও বলেন, ভঙ্গুর রাষ্ট্রগুলোতে শান্তি ও স্থিতিশীলতায় বিনিয়োগ করলে অভিবাসন, নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক সংকট অনেকটাই প্রশমিত করা সম্ভব হবে। কারণ, “এক অঞ্চলের সংকট সারা বিশ্বে প্রভাব ফেলতে পারে—এমনকি স্থিতিশীল দেশগুলোর ওপরেও।”

অসলো-ভিত্তিক শান্তি গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৪৬ সালের পর ২০২৪ সালেই বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সশস্ত্র সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে।

বিশ্বব্যাংক বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে সংঘাতপীড়িত দেশগুলোতে চরম দারিদ্র্যপীড়িত মানুষের সংখ্যা পৌঁছাতে পারে ৪৩ কোটি ৫০ লাখে।

উল্লেখ্য, সোমবার সেভিলে শুরু হচ্ছে ‘উন্নয়ন অর্থায়ন নিয়ে চতুর্থ আন্তর্জাতিক সম্মেলন’, যেখানে ৫০টিরও বেশি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এক দশকের মধ্যে এটিই এ বিষয়ক সবচেয়ে বড় বৈশ্বিক সম্মেলন।