ভারতের রাজনীতিতে ফের তীব্র উত্তাপ ছড়িয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা মঞ্চ থেকে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির বিরুদ্ধে তার কড়া অভিযোগ মোদি চোর, অমিত শাহ চোর, বিজেপি চোর।

কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন অভিবাসন আইনকে কেন্দ্র করেই এই রাজনৈতিক সংঘাতের সূত্রপাত। ১ সেপ্টেম্বর জারি হওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আফগানিস্তান, পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী দেশের সংখ্যালঘুরা ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ভারতে এলে বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই থাকতে পারবেন। বিজেপি বলছে, মানবিক কারণে এ পদক্ষেপ জরুরি। তবে মমতার মতে, আসল লক্ষ্য হলো ভোটের আগে ভোটার তালিকায় কারসাজি।

বিধানসভায় দাঁড়িয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন, এত গুরুত্বপূর্ণ আইন সংসদে আলোচনাই হলো না? কোনো স্থায়ী কমিটি বা সিলেক্ট কমিটির মাধ্যমে যাচাই হলো না?

মমতার বক্তব্য চলাকালীন বিজেপি বিধায়করা প্রতিবাদে ফেটে পড়েন, কাগজ ছুঁড়ে তার বক্তব্য বন্ধ করার চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে চার বিজেপি বিধায়ককে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেন স্পিকার।

মমতার দাবি, বিজেপি মূলত বাঙালির স্বার্থবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। তিনি বলেন, “তারা সংসদীয় শিষ্টাচার মানে না, গণতন্ত্রকে আঘাত করছে। কিন্তু আমাকে দমাতে পারবে না।”

বিজেপি শিবির পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে মমতাকে নিয়েই ‘চোর’ স্লোগান তোলে। এর জবাবে মুখ্যমন্ত্রী আরও তীব্র কণ্ঠে মোদি ও অমিত শাহকে লক্ষ্য করে চুরির অভিযোগ আনেন।

বিশ্লেষকদের মতে, এই বাকযুদ্ধ কেবল মুখের লড়াই নয়, বরং ২০২৬ সালের রাজ্য নির্বাচনের পূর্বাভাস। বিজেপি অভিবাসন ইস্যুকে ভোট রাজনীতির হাতিয়ার বানাচ্ছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের। অন্যদিকে বিজেপির দাবি, তৃণমূল ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

ভোটের আর মাত্র এক বছরেরও কম সময় বাকি। রাজনৈতিক অঙ্গনে এখনো উত্তাপ তুঙ্গে, আর নতুন অভিবাসন আইনকে ঘিরে এই সংঘাত যে আগামী দিনে আরও বাড়বে, তা নিয়ে কারও দ্বিমত নেই।