সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থিত জাতিসংঘের কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজায় চলমান মানবিক সংকটের ফলে প্রায় ১০ লক্ষাধিক নারী ও শিশু অনাহারের শিকার হয়েছে। এই পরিস্থিতিকে অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে জাতিসংঘ অবিলম্বে এর অবসান ঘটানোর আহ্বান জানিয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্সে একটি পোস্টে জাতিসংঘ জানায়, গাজায় নারী ও কন্যাশিশুদের অনাহার পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ। এর সমাধানে সকল নারী ও শিশুদের কাছে জীবন রক্ষাকারী সাহায্য পৌঁছানো, একটি জরুরি যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা এবং সকল বন্দীর মুক্তি দেওয়া অপরিহার্য।

এর আগে, তীব্র আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে এবং অনাহারজনিত মৃত্যুর ঘটনা বৃদ্ধির পর ইসরায়েল গাজায় কিছু সময়ের জন্য বিমান হামলা বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়, যাতে সেখানে মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে পারে। তবে, মানবিক সংস্থাগুলো জানিয়েছে যে এই সহায়তার পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ না হলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।

বিশ্বের ক্ষুধা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) জানিয়েছে, গাজার কিছু এলাকা, বিশেষ করে গাজা শহরে দুর্ভিক্ষের সীমা অতিক্রম করেছে। সংস্থাটি এই অবস্থাকে অবরুদ্ধ উপত্যকার জন্য 'সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি' হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছর গাজায় মোট ৭৪টি অপুষ্টিজনিত মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে ৬৩টিই ঘটেছে কেবল জুলাই মাসে। মৃতদের মধ্যে ৩৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং ২৪ জন পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু ছিল।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, অনাহারজনিত কারণে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৭৫ জনে দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে ৯৩ জনই শিশু।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই পরিস্থিতিকে 'অনাহারকে যুদ্ধের হাতিয়ার' হিসেবে ব্যবহার বলে আখ্যা দিয়েছে এবং এটি বন্ধ করার জন্য ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।