মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করা ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’-এর অভিযোগকে অযৌক্তিক ও বিভ্রান্তিকর বলে সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।

বুধবার (২৩ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এই তথ্য জানিয়েছে।

সম্প্রতি ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের ‘প্রমাণ তৈরি করে’ তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিলেন ওবামা।

ট্রাম্প দাবি করেন, ওবামা ও হিলারি ক্লিনটন এই ষড়যন্ত্রের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং বিষয়টিকে তিনি ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’ বলে অভিহিত করেন। এই মন্তব্য তিনি করেন ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট মার্কোস জুনিয়রের সঙ্গে হোয়াইট হাউসের এক বৈঠকে।

এ প্রসঙ্গে ওবামার দপ্তর থেকে এক ব্যতিক্রমী বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা সাধারণত এমন অসঙ্গত ও ভুল তথ্যের উত্তর দিই না, প্রেসিডেন্টের পদমর্যাদার প্রতি সম্মান রেখে। তবে এবারের অভিযোগ এতটাই ভিত্তিহীন যে জবাব দেওয়া জরুরি।

ওই বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, সাম্প্রতিক সময়ে কংগ্রেস সদস্য তুলসি গ্যাবার্ডের প্রকাশিত ১১ পৃষ্ঠার এক নথিতে ওবামা প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী ষড়যন্ত্র’-এর অভিযোগ আনা হয়েছে, যা একেবারেই অমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলা হয়, ২০১৬ সালের নির্বাচনে রাশিয়া হস্তক্ষেপের চেষ্টা করলেও ভোটের ফলাফলে কোনও প্রভাব ফেলতে পারেনি—এই ব্যাপকভাবে স্বীকৃত তথ্যই এখনও সত্য। ট্রাম্প ও গ্যাবার্ডের দাবি মূলত বিভ্রান্তি তৈরি ও অতীত তদন্তগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে রবার্ট মুলারের নেতৃত্বে প্রকাশিত বিশেষ কৌঁসুলির প্রতিবেদন এবং ২০২০ সালে মার্কো রুবিওর নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটির প্রকাশিত প্রতিবেদনে রুশ হস্তক্ষেপের বিষয়টি পুনরায় নিশ্চিত করা হয়েছিল।

সাবেক সিআইএ বিশ্লেষক ফালটন আর্মস্ট্রং বলেন, গ্যাবার্ডের নথিটি একপেশে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে রচিত। এতে অস্পষ্ট ব্যাখ্যা ও ভুল তথ্য ব্যবহার করে মিথ্যা বার্তা ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে।

এই বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এমন অভিযোগ মার্কিন রাজনীতিতে নতুন করে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে নির্বাচনী বছরে।