ইউক্রেনের চেরনোবিল পারমাণবিক কেন্দ্রের আশপাশে দেখা গেছে অদ্ভুত নীলচে রঙের লোমওয়ালা কয়েকটি কুকুর। সামাজিক মাধ্যমে এই বিরল প্রাণীগুলোর ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, যা প্রকাশ করেছে ‘ডগস অব চেরনোবিল’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তারা দীর্ঘদিন ধরে ওই অঞ্চলের পরিত্যক্ত কুকুরদের খাদ্য ও চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে।

১৯৮৬ সালের ভয়াবহ পারমাণবিক বিস্ফোরণের পর যে পোষা প্রাণীগুলো মালিকহীন হয়ে পড়েছিল, এই কুকুরগুলো সেই বংশেরই উত্তরসূরি বলে ধারণা করা হচ্ছে। বর্তমানে তারা চেরনোবিলের নিষিদ্ধ অঞ্চল বা এক্সক্লুশন জোনে বেঁচে থাকার এক অনন্য প্রতীক হয়ে উঠেছে। মানুষের অনুপস্থিতির কারণে অঞ্চলটি এখন অনেক বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে।

সংগঠনটির হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ১৮ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে ৭০০টিরও বেশি কুকুরের যত্ন নেওয়া হয়। তারা নিয়মিত খাদ্য, টিকাদান ও বন্ধ্যাকরণ কার্যক্রম পরিচালনা করে।

সম্প্রতি এক চিকিৎসা অভিযানের সময় তিনটি কুকুরের শরীরে উজ্জ্বল নীল লোম লক্ষ্য করা যায়। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, মাত্র এক সপ্তাহ আগেও কুকুরগুলো স্বাভাবিক রঙেই ছিল। আকস্মিক এ পরিবর্তনে গবেষকরা হতবাক।

‘ডগস অব চেরনোবিল’ জানায়, আমরা এখনো নিশ্চিত নই কেন এমনটা হয়েছে। ধারণা করছি, তারা হয়তো কোনো রাসায়নিক বা ধাতব পদার্থের সংস্পর্শে এসেছে। পরীক্ষার জন্য কুকুরগুলোকে ধরার চেষ্টা চলছে।

বিজ্ঞানীরাও ঘটনার ব্যাখ্যা খুঁজতে মাঠে নেমেছেন। তাদের মতে, শিল্প কারখানার বর্জ্য বা ভারী ধাতুর উপস্থিতি লোমের রঙ পরিবর্তনের কারণ হতে পারে। ইতিমধ্যে কুকুরগুলোর ত্বক, লোম ও রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে পরীক্ষার জন্য।

যদিও এই অদ্ভুত দৃশ্য অনেকের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে, সংগঠনটি জানিয়েছে, কুকুরগুলো সম্পূর্ণ সুস্থ, স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করছে এবং তাদের মধ্যে কোনো অসুস্থতার লক্ষণ পাওয়া যায়নি।