ইউক্রেনজুড়ে রুশ ড্রোন ও মিসাইল হামলায় অন্তত ১৯ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন। দেশটির জাতীয় পুলিশ জানায়, স্থানীয় সময় বুধবার ভোরে চালানো এই সমন্বিত হামলায় পশ্চিমাঞ্চলীয় লভিভ ও তেরনোপিলসহ বিভিন্ন এলাকায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
হামলার সময় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তুরস্ক সফরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি আশা করছেন, এ সফরে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে স্থবির হয়ে পড়া আলোচনাকে আবারও সচল করা যাবে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে জেলেনস্কি বলেন, নাগরিক জীবনের ওপর প্রতিটি বর্বর হামলা দেখিয়ে দিচ্ছে—রাশিয়ার ওপর চাপ এখনো যথেষ্ট নয়। কার্যকর নিষেধাজ্ঞা ও ইউক্রেনকে প্রয়োজনীয় সহায়তাই পরিস্থিতি বদলাতে পারে।
তিনি আরও জানান, হামলায় রাশিয়া ৪৭০টির বেশি ড্রোন এবং ৪৮টি মিসাইল ব্যবহার করেছে।
বুধবার সকাল থেকে পুরো ইউক্রেনে বিমান হামলার সতর্কতা জারি করা হয়। বিস্ফোরণে লভিভ ও তেরনোপিল শহর কেঁপে ওঠে। তেরনোপিলে অন্তত ১৯ জন নিহত ও ১৪ শিশুসহ মোট ৬৪ জন আহত হয়েছেন বলে টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে দেশটির জাতীয় পুলিশ জানিয়েছে।
ইউক্রেনের জ্বালানি মন্ত্রণালয় জানায়, হামলায় একাধিক অঞ্চলে জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিতে হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ চিত্র এখনো জানা যায়নি।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, তেরনোপিলে একটি বহুতল আবাসিক ভবনে মিসাইল আঘাত হানে। স্থানীয় এক বাসিন্দা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, হামলার সময় লভিভ শহরেও ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে।
লভিভের আঞ্চলিক গভর্নর মাকসিম কোজিতস্কিই বলেন, হামলায় একটি জ্বালানি স্থাপনা এবং একটি শিল্প এলাকায় আঘাত হানা হয়েছে, যদিও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
ইউক্রেনীয় সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত ছবিতে দেখা যায়, তেরনোপিলের একটি টাওয়ার ভবনের ওপরের তলাগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, আর ধোঁয়ার স্তম্ভের ভেতর আগুনের শিখা জ্বলছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভেও রাতের এই হামলায় অন্তত ৩৬ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ জানায়, সেখানে ১০টির বেশি অ্যাপার্টমেন্ট ভবন, একটি স্কুল, একটি সুপারমার্কেট এবং একটি অ্যাম্বুলেন্স সাবস্টেশনসহ বহু স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সূত্র: আল-জাজিরা