DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

মধ্যপ্রাচ্য

আরও ২৫ লাশ উদ্ধার

ইসরাইলী কর্তৃপক্ষের পরানো অপমানজনক পোশাক পোড়াল ফিলিস্তিনীরা

কারাগার থেকে আরও ৩৬৯ ফিলিস্তিনীকে মুক্তি দিয়েছে দখলদার ইসরাইল। যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

১৬ ফেব্রুয়ারি, আনাদোলু, আল জাজিরা, টাইমস অব ইসরাইল: কারাগার থেকে আরও ৩৬৯ ফিলিস্তিনীকে মুক্তি দিয়েছে দখলদার ইসরাইল। যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকার্মীদের সংগঠন হামাস তিন ইসরাইলী জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে। এরপর কারাগার থেকে ৩৬৯ বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরাইল।

এদিকে, মুক্তি পাওয়ার পর ইসরাইলী কর্তৃপক্ষের পরানো ‘অপমানজনক’ পোশাক পুড়িয়ে ফেলেছেন ফিলিস্তিনীরা। মূলত মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনীদের ইহুদি পরিচয় ও ইহুদি ধর্মের প্রতিনিধিত্বকারী প্রতীক ডেভিডের তারা এবং আরবি ভাষায় ‘আমরা ভুলব না বা ক্ষমা করব না’ লেখা শার্ট পরতে বাধ্য করেছিল ইসরাইল। মুক্তির পর নিজ ভূমিতে ফিরে এসে তাদের অনেকেই এ শার্ট পুড়িয়ে ফেলেছেন।

গত শনিবার কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে। এর আগে, কয়েকদিনের উত্তেজনাপূর্ণ আলোচনার পর শনিবার গাজায় তিন বন্দীর বিনিময়ে ৩৬৯ জন ফিলিস্তিনীকে মুক্তি দেয়া হয়। বন্দী বিনিময়ের আগে ইসরাইলী কারাগার ওই বার্তা ও ডেভিডের তারাযুক্ত শার্ট কয়েকজন ফিলিস্তিনীকে পরিয়ে তাদের ছবি প্রকাশ করে। ফেরত পাঠানোর সময় বার্তাগুলো ঢাকতে অনেক ফিলিস্তিনী তাদের শার্ট উল্টো করে পরেন। কাতারের গণমাধ্যম আল জাজিরার একটি ফুটেজে দেখা গেছে, গাজার খান ইউনিসে অবস্থিত ইউরোপিয়ান গাজা হাসপাতালে পৌঁছানোর পর কয়েকজন ফিলিস্তিনী ওই শার্টগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেন। হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা আমাদের বীর বন্দীদের পিঠে বর্ণবাদী স্লোগান চাপিয়ে তাদের প্রতি নিষ্ঠুর ও সহিংস আচরণের নিন্দা জানাই। এটি মানবিক আইন ও রীতিনীতির স্পষ্ট লঙ্ঘন।’ আরও ২৫ ফিলিস্তিনীর লাশ উদ্ধার : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখ-ে ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে আরও ২৫ ফিলিস্তিনীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর ফলে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪৮ হাজার ২৬০ ছাড়িয়ে গেছে। দীর্ঘ ১৫ মাসের বেশি সময় পর গত মাসেই ফিলিস্তিনের গাজায় কার্যকর হয়েছে যুদ্ধবিরতি চুক্তি। তবে এরপর থেকেই সেখানে ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে একের পর এক উদ্ধার হচ্ছে নিহতদের লাশ। আর এতে করে বেড়েই চলেছে প্রাণহানির সংখ্যা।

৪৮ ঘণ্টায় আরও ১২ জন আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এতে করে ইসরাইলী আক্রমণে আহতের সংখ্যা ১ লাখ ১১ হাজার ৬৮৮ জনে পৌঁছৈছে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না। গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। তিন-পর্যায়ের এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যে বন্দি বিনিময় এবং স্থায়ী শান্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরাইলী বাহিনী প্রত্যাহারের লক্ষ্যমাত্রাও রয়েছে। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব থাকা সত্ত্বেও ইসরাইল দীর্ঘদিন ধরে অবরুদ্ধ এই ভূখ-ে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছিল। জাতিসংঘের মতে, ইসরাইলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনী বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরাইল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।