পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দেশব্যাপী কর্মসূচি শুরু করছে দলটি। পিটিআই জানিয়েছে, বর্তমান সরকারকে অপসারণ না করা পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।

পিটিআই নেতা আসাদ কায়সার বলেন, ৫ আগস্ট আন্দোলনের সূচনা হলেও এটিকে ‘শেষ আহ্বান’ হিসেবে দেখা উচিত নয়। সরকারের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগকে অরাজকতা সৃষ্টির পরিকল্পনা হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০২৩ সালের এই দিনে ইমরান খান দুর্নীতির মামলায় কারাগারে যান। এ কারণেই পিটিআই আজকের দিনটিকে প্রতীকী সূচনা হিসেবে বেছে নিয়েছে।

আসাদ জানান, প্রাদেশিক ইউনিটগুলোকে মিছিল, গণসচেতনতা কর্মসূচি ও অন্যান্য প্রতিবাদ আয়োজনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সমাজের সব স্তরের মানুষকে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, কারণ এই আন্দোলন জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য।

তার অভিযোগ, পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় নেতাকর্মীদের ওপর ধরপাকড় চলছে, কিছু জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। রাওয়ালপিন্ডি জেলা প্রশাসনও ১৪৪ ধারা জারি করে ১০ আগস্ট পর্যন্ত সব ধরণের সমাবেশ, মিছিল, বিক্ষোভ ও চারজনের বেশি লোকের জমায়েত নিষিদ্ধ করেছে।

পিটিআই পাঞ্জাব মিডিয়া সেলের প্রধান শায়ান বশির এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, গত কয়েক দিনে প্রায় ২০০টি অভিযানে অনেক কর্মীকে আটক করা হয়েছে এবং পরে শর্তসাপেক্ষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, লাহোর ও আদিয়ালা জেলের বাইরে বড় কর্মসূচি এবং পাঞ্জাবজুড়ে মিছিল-সমাবেশের পরিকল্পনা আছে।

পিটিআই নেতা ও সিনেটর আলি জাফর বলেন, ইমরান খান আদালতের মাধ্যমেই মুক্তি পেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তবে তাকে রাজনৈতিকভাবে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে, এমনকি তার ও তার স্ত্রীর ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। অতীতে তিনি দুই শর্তে সরকারের সঙ্গে সংলাপে রাজি হয়েছিলেন, কিন্তু সরকার তা মানেনি।

অন্যদিকে, পাঞ্জাবের তথ্যমন্ত্রী আজমা বোখারী বলেন, জনগণ ৫ আগস্টের এই কর্মসূচিকে প্রত্যাখ্যান করবে। লাহোরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি পিটিআইকে একটি ‘ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী’ হিসেবে উল্লেখ করে অভিযোগ করেন, দলটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে আঘাত করতে চায়।

তিনি আরও দাবি করেন, একসময় ‘হাকিকি আজাদি’ স্লোগান দেওয়া ইমরান খান যুক্তরাষ্ট্রে এক কোটি ৮০ লাখ ডলারের বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছেন, যা তার পূর্বের বক্তব্যের বিপরীত। এছাড়া, যখন পুরো পাকিস্তান ৫ আগস্ট কাশ্মীরিদের প্রতি সংহতি জানাচ্ছে, তখন পিটিআইয়ের এই কর্মসূচি দুঃখজনক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

সূত্র: ডন