মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের এক উৎসব চলাকালে বিমান হামলায় কমপক্ষে ৪০ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। হামলায় আরও অন্তত ৮০ জন আহত হয়েছেন, নিহতদের মধ্যে একাধিক শিশু রয়েছে।

ফরাসি সংবাদমাধ্যম এএফপি স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, সোমবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় চাউং উ শহরে এই ঘটনা ঘটে। থাদিঙ্গুত পূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধদের ধর্মীয় উৎসব চলছিল, একই স্থানে সামরিক জান্তা-বিরোধী একটি বিক্ষোভও অনুষ্ঠিত হচ্ছিল।

আয়োজক কমিটির এক সদস্য জানান, সন্ধ্যা নামার পর উৎসবের ভিড়ের মাঝেই হঠাৎ আকাশ থেকে দুটি বোমা নিক্ষেপ করা হয়। বিস্ফোরণের শব্দে আশপাশের এলাকা কেঁপে ওঠে। তিনি বলেন, “আমরা আগেই মানুষকে সতর্ক করেছিলাম, তাই কিছু মানুষ পালিয়ে বাঁচতে পেরেছে। কিন্তু বোমা পড়ার পর দৃশ্যটা ছিল বিভীষিকাময়—শিশুদের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়।”

অন্য এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আকাশে একটি মোটরচালিত প্যারাগ্লাইডার দেখা যায়, এরপরই ধারাবাহিকভাবে বোমা পড়ে। তিনি বলেন, “আমার চোখের সামনে দু’জন সহযোদ্ধা মারা গেলেন। পরদিন নয়জনের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিয়েছি।”

২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ চলমান। সেনা সরকারবিরোধী বিভিন্ন জাতিগত গোষ্ঠী ও গণতন্ত্রকামী সংগঠনগুলো একজোট হয়ে জান্তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোও চাউং উ শহরে এই হামলার খবর নিশ্চিত করেছে। তবে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত মিয়ানমারের সেনা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

আগামী ২৮ ডিসেম্বর দেশটিতে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। জান্তা সরকার বলছে, এই নির্বাচন “জাতীয় ঐক্যের সূচনা” করবে। কিন্তু জাতিসংঘের একজন বিশেষজ্ঞ একে “প্রতারণামূলক উদ্যোগ” বলে আখ্যা দিয়েছেন। বিদ্রোহী দলগুলোও জান্তার নির্বাচনের বিরোধিতা করে তা বাধাগ্রস্ত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।