আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে বিমান হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান।
এ হামলায় নিষিদ্ধ সংগঠন তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের (টিটিপি) প্রধান নূর ওয়ালি মেসুদ নিহত হয়েছেন—এমন গুঞ্জন ছড়িয়েছে। তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী কারি সাইফুল্লাহ মেসুদসহ কয়েকজন শীর্ষ সদস্যও প্রাণ হারিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম Pakistan Observer জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) দিবাগত রাতের দিকে পাকিস্তান বিমানবাহিনী কাবুলে লক্ষ্যভেদী এ অভিযান পরিচালনা করে। সূত্রমতে, নূর ওয়ালি তখন একটি গাড়িতে চলাচল করছিলেন, হামলায় গাড়িটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যদিও এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি, তবে আহত হয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর পাওয়া গেছে।
হামলার বিবরণ
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কাবুলের এক সড়কে চলন্ত একটি গাড়িকে লক্ষ্য করে বিমান থেকে হামলা চালানো হয়। বিস্ফোরণের শব্দ ছিল প্রচণ্ড, এবং হামলার পর আকাশে একাধিক যুদ্ধবিমান চক্কর দিতে দেখা যায়, যা স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
হামলায় নিহতদের মধ্যে কারি সাইফুল্লাহ মেসুদও আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাঁকে টিটিপির সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ নেতা হিসেবে দেখা হচ্ছিল।
সম্প্রতি টিটিপির হামলায় পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ সদস্য নিহত হওয়ার পর দেশটির সরকার কঠোর পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছিল। প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ কয়েক দিন আগেই বলেছিলেন, “অনেক হয়েছে, আমরা আর সহ্য করব না।” তাঁর সেই বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কাবুলে এই বিমান হামলা চালানো হয়।
গত কয়েক সপ্তাহে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া অঞ্চলে সেনা অভিযানে বহু টিটিপি সদস্য নিহত হয়েছিল। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, সাম্প্রতিক হামলার পর টিটিপি পাল্টা প্রতিশোধমূলক হামলায় নামতে পারে, বিশেষ করে আফগান সীমান্তসংলগ্ন পাহাড়ি এলাকাগুলোতে তাদের সক্রিয় উপস্থিতির কারণে।
পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা (ডিজিএফআই)-এর মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী শুক্রবার সকালে পেশোয়ারে কর্পস সদরদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে হামলার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করবেন বলে জানা গেছে।
আফগান তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ এক্স (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট করে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানান। তবে তিনি বিস্ফোরণের মাত্রা ‘ছোট’ বলে দাবি করলেও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হামলার শক্তি ছিল ব্যাপক এবং এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী।