মাইক্রোসফটের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রে এক আলোচিত মুহূর্ত তৈরি হয়েছে, যখন এক নারী কর্মী গাজায় চলমান ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে সরাসরি মঞ্চে প্রতিবাদ জানান। ক্ষোভ প্রকাশ করে এরইমধ্যে মাইক্রোসফটের চাকরিও ছেড়েছেন তিনি।

রোববার (৬ এপ্রিল) এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সেনাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) প্রযুক্তি সরবরাহ করার অভিযোগে কোম্পানির ওপর ক্ষোভ জানিছেন তিনি।

গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসনে সহায়তা করার জন্য টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফটের সিইও সত্য নাদেলা এবং সাবেক সিইও বিল গেটস ও স্টিভ বলমারের মুখোমুখি হয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন সংস্থাটির কর্মী ভানিয়া আগরওয়াল বলেন, মাইক্রোসফটের প্রযুক্তি ব্যবহার করে গাজায় ৫০ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। আপনাদের সাহস হলো কীভাবে? তাদের (ফিলিস্তিনিদের) রক্তের ওপর উদ্‌যাপন করার জন্য আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিত।

মাইক্রোসফটকে ‘ডিজিটাল অস্ত্র প্রস্তুতকারক’ আখ্যা দিয়ে ভানিয়া আগরওয়াল বলেন, প্রযুক্তির মাধ্যমে সহিংসতাকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এ সময় তিনি কোম্পানিটিকে তিনি ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করারও আহ্বান জানান।

আগরওয়ালকে পরে হল থেকে জোর করে বের করে দেওয়া হয়। নির্বাহীরা তার প্রতিবাদের কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি এবং এরপর তাদের প্যানেল পুনরায় অন্য আলোচনা শুরু করে। ভানিয়া আগরওয়াল ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ১৩৩ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর এবং ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানে সংস্থাটির এআই এবং অন্য প্রযুক্তি ব্যবহারের অভিযোগে মাইক্রোসফটের তীব্র সমালোচনা করেছেন।

পদত্যাগপত্রে ভানিয়া লিখেছেন, আমি আমার বিবেকের কারণে, এমন একটি কোম্পানির অংশ হতে পারি না যারা এই সহিংস অন্যায়ের অংশ। যদি আপনাকে (কর্মীদের উদ্দেশে) মাইক্রোসফটে কাজ চালিয়ে যেতে হয়, তাহলে আমি আপনাদের নিজ নিজ অবস্থান, ক্ষমতা এবং সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করে মাইক্রোসফটকে তার নিজস্ব মূল্যবোধ এবং লক্ষ্যের প্রতি জবাবদিহি করতে অনুরোধ করছি।

গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৬০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার মানুষ।