ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে নাৎসি নেতা অ্যাডলফ হিটলারের চেয়েও ভয়ংকর বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।

তিনি বলেন, গত ২০ মাসে নেতানিয়াহুর নির্দেশে ৫৯ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা শিল্প মেলা IDEF 2025-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এরদোগান এ মন্তব্য করেন। তুর্কি দৈনিক ডেইলি সাবাহ এ তথ্য জানিয়েছে।

এরদোগান বলেন, গাজায় চলমান গণহত্যা শুধু ইসরাইলি বর্বরতার প্রতিচ্ছবি নয়, বরং এটি এমন একটি অধ্যায় যা বিশ্ব মানবতাকে লজ্জিত করে। যারা এই নির্মমতা দেখে চুপ করে থাকে, তারাও এই অপরাধের অংশীদার।

তিনি আরও বলেন, তুরস্ক এখন আর কারও মুখাপেক্ষী নয়। দেশের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ফলে আজ তুরস্ক নিজ শক্তিতে দাঁড়িয়ে প্রতিরক্ষা খাতে বৈশ্বিক অবস্থান গড়ে তুলেছে।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট জানান, এই মেলা শুধু প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের প্রদর্শনী নয়, বরং এটি তুর্কি জাতির স্বাধীনতা ও আত্মনির্ভরশীলতার প্রতীক।

এরদোগান বলেন, আজ আমরা শুধু একটি প্রতিরক্ষা শিল্পের সাফল্য দেখছি না, বরং এটি একটি জাতির নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে বিশ্বে আত্মপ্রকাশের গর্বিত মুহূর্ত।

তিনি অতীতের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বলেন, ১৯৬০-এর দশকে সাইপ্রাস সংকট কিংবা ১৯৯০-এর দশকের সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের সময় তথাকথিত মিত্র রাষ্ট্রগুলো তুরস্ককে সহযোগিতা করেনি। ১৯৭৪ সালের সাইপ্রাস শান্তি অভিযানের পর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। এমনকি তুরস্কের পাঠানো যুদ্ধবিমান মেরামত না করে আটকে রাখা হয়েছিল এবং হ্যাঙ্গারে রাখার জন্য আলাদা ভাড়াও নেওয়া হয়েছিল।

এরদোগান আরও অভিযোগ করেন, সাধারণ রেডিওর মতো মৌলিক যোগাযোগ যন্ত্রও তখন সরবরাহ করা হয়নি। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সঙ্গে তীব্র উত্তেজনার সময়ও পশ্চিমারা প্রতিশ্রুতি মানেনি।

তিনি বলেন, আমরা যখন নিজেদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে উদ্যোগ নিই, তখন একের পর এক বাধা দেওয়া হয়। এমনকি আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করা হলেও, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আমাদের দেশ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

তুরস্ক এখন সেই সময় পার করে এসেছে এবং আজ বিশ্ব প্রতিরক্ষা শিল্পে নিজের অবস্থান দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা করেছে বলেও উল্লেখ করেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান।