আঘাত আর শোক বয়ে ফিরছি, তবু ফিরে আসতে পেরেছি, এই জন্য আল্লাহর প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা।
এই কথাগুলো বলছিলেন আমীর আবু ইয়াদে, গাজার দক্ষিণের খান ইউনিস এলাকায় দাঁড়িয়ে। বয়স মাত্র ৩২ হলেও গাজার সহিংস বাস্তবতা তাকে এক গভীর মানসিক অভিজ্ঞতা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপিকে তিনি এসব কথা বলেন।
শুক্রবার, বাংলাদেশ সময় দুপুরের পর, ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে বিপুল সংখ্যক গাজাবাসী পুনরায় উত্তর গাজার নিজ নিজ বাসভূমিতে ফিরতে শুরু করেন। দীর্ঘ সহিংসতা, ক্ষয়ক্ষতির মধ্যেও এই ফেরা যেন অনেকের কাছে এক নতুন আশার নাম।
৩৯ বছর বয়সী মোহাম্মদ মরতাজা ফিরে যাচ্ছেন নিজের বাড়ির খোঁজে। আশায় বুক বাঁধছেন, হয়তো বাড়িটা এখনো অক্ষত আছে। আমি প্রার্থনা করি, আমার বাড়ি যেন এখনো দাঁড়িয়ে থাকে। যুদ্ধ আর ফিরে না আসে, সেটাই চাই।
আরেকজন, ৫৩ বছর বয়সী আরিজ আবু সাদাহে, যিনি যুদ্ধ শুরু হওয়ার সময়ই গৃহহারা হয়েছিলেন। দীর্ঘ সময় পর ফিরতে পারলেও তার মন ভারাক্রান্ত, কারণ তিনি হারিয়েছেন তার এক ছেলে ও এক মেয়ে।
তবুও তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির খবরে কিছুটা শান্তি অনুভব করছি। আমি সন্তানদের হারিয়েছি, সেটা কখনও ভোলার নয়। কিন্তু ঘরে ফেরার অনুভূতিও অমূল্য।
গত ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে গাজা উপত্যকায় একের পর এক ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। এ সময়ের মধ্যে মাত্র দু’মাসের মতো কিছুটা শান্তিপূর্ণ সময় পাওয়া গেলেও, বাকি প্রায় পুরো সময় জুড়েই চলেছে নির্বিচার বোমাবর্ষণ ও গোলাবর্ষণ।
এই দীর্ঘ সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজারের কাছাকাছি মানুষ। পুরো গাজা যেন এক ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
শুক্রবার, স্থানীয় সময় দুপুরে (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা) আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার ঘোষণা দেয় ইসরাইলি সেনাবাহিনী। জানানো হয়, যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুযায়ী ইসরাইলি বাহিনী তাদের অবস্থান নির্ধারিত কিছু এলাকায় সীমাবদ্ধ রাখবে।