সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা অঞ্চলে আবিষ্কৃত হয়েছে এক বিশাল সোনার খনি।
প্রায় ১২৫ কিলোমিটারজুড়ে বিস্তৃত এই খনিজভাণ্ডারকে দেশটির ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার হিসেবে দেখা হচ্ছে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় খনিজ অনুসন্ধান সংস্থা ‘মাআদেন’ জানিয়েছে, মানসুরা–মাসারাহ খনির দক্ষিণাঞ্চলে সাম্প্রতিক অনুসন্ধানে উচ্চমাত্রার সোনার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে।
পরীক্ষাগারে নেওয়া নমুনায় দেখা গেছে—প্রতি টন মাটিতে সর্বোচ্চ ২০.৬ গ্রাম পর্যন্ত সোনা পাওয়া গেছে, যা আন্তর্জাতিক মানে অত্যন্ত সমৃদ্ধ হিসেবে গণ্য।
মাআদেনের প্রধান নির্বাহী রবার্ট উইলে বলেন, “এই আবিষ্কার মক্কাকে বৈশ্বিক সোনার মানচিত্রে নতুনভাবে পরিচিত করবে।
এটি সৌদি অর্থনীতির জন্য যেমন আশাব্যঞ্জক, তেমনি প্রযুক্তিগত উন্নয়নেও বড় ভূমিকা রাখবে।”
বর্তমানে মানসুরা–মাসারাহ খনিতে প্রায় ৭০ লাখ আউন্স সোনা মজুত আছে এবং প্রতিবছর ২ লাখ ৫০ হাজার আউন্স সোনা উত্তোলন করা হয়।
নতুন আবিষ্কারটি উৎপাদন ও রপ্তানি বহুগুণে বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অঞ্চলজুড়ে এক ধরনের “গ্লোবাল গোল্ড বেল্ট” বা আন্তর্জাতিক মানের স্বর্ণপট্টি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা ভবিষ্যতে সৌদি আরবকে বিশ্বের অন্যতম বড় স্বর্ণউৎপাদক দেশে পরিণত করতে পারে।
সৌদি শিল্প ও খনিজসম্পদমন্ত্রী বান্দার আলখোরাইফ বলেছেন, “খনিজ খাত এখন আমাদের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল সেক্টর।
নতুন এই স্বর্ণখনি সৌদি অর্থনীতির বৈচিত্র্য আনার প্রচেষ্টায় এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।”
এছাড়া মক্কার কাছাকাছি ওয়াদি আল-জাও ও জাবাল শাইবান অঞ্চলেও নতুন সোনা ও তামার ভাণ্ডার পাওয়া গেছে, যা ভবিষ্যতে বৃহৎ পরিসরে খনন কার্যক্রমের পথ তৈরি করবে বলে জানায় মাআদেন।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এই আবিষ্কার হাজারো কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে, বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে এবং বৈশ্বিক স্বর্ণবাজারে সৌদি আরবকে আরও শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাবে।
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি স্বর্ণের মজুত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে (৮,১৩৩ টন), এরপর জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স ও রাশিয়া।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সৌদির নতুন এই স্বর্ণভাণ্ডার বৈশ্বিক বাজারে নতুন প্রতিযোগিতা তৈরি করতে পারে এবং আন্তর্জাতিক দামে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।