যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্য থেকে নির্বাচিত কংগ্রেস সদস্য মারজোরি টেলর গ্রিন আগামী জানুয়ারিতে প্রতিনিধি পরিষদ থেকে পদত্যাগ করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রকাশ্য বিরোধ চূড়ান্ত রূপ নেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই এই ঘোষণা এলো। খবর আল জাজিরার।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ‘মাগা’ সমর্থক হিসেবে পরিচিত গ্রিন জানান, তিনি আগামী ৫ জানুয়ারি কংগ্রেস ছাড়বেন। তার বক্তব্য—“আমি সামনে নতুন কিছুতে মনোনিবেশ করতে চাই।”
ষড়যন্ত্রমূলক তত্ত্ব প্রচার ও ট্রাম্পের প্রতি অন্ধ সমর্থনের কারণে রিপাবলিকানদের ভেতরেই তার বিশেষ পরিচিতি গড়ে উঠেছিল। তবে শিশু যৌন নিপীড়ক জেফ্রি এপস্টাইনের গোপন নথি প্রকাশ নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে মতবিরোধ শুরু হলে সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে।
পদত্যাগের ঘোষণায় গ্রিন তার কংগ্রেসীয় কাজের তালিকা তুলে ধরেন এবং ট্রাম্পের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “আমার আত্মসম্মান, মর্যাদা ও পরিবার আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমি চাই না আমার আসন এমন এক প্রাইমারি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জড়াক, যেখানে প্রেসিডেন্ট নিজেই আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন।” তিনি আরও দাবি করেন, নির্বাচনে জিতলেও রিপাবলিকানরা হয়তো মধ্যবর্তী নির্বাচনে পিছিয়ে পড়বে।
গ্রিনের পদত্যাগের গুঞ্জন আগে থেকেই মার্কিন সংবাদমাধ্যমে ছিল। ধারণা করা হচ্ছিল, তিনি জর্জিয়ায় সেনেট বা গভর্নর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। ট্রাম্পও একাধিক পোস্টে জানিয়েছেন, দুর্বল জনসমর্থনের কারণে তিনি গ্রিনকে এই পদগুলোতে না দাঁড়ানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন।
একসময় দুজনই ছিলেন ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক মিত্র। “আমেরিকা ফার্স্ট” এজেন্ডা এগিয়ে নিতে গ্রিন সক্রিয় ছিলেন। কিন্তু এপস্টাইন সংক্রান্ত সব নথি প্রকাশের দাবি নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে তার মতবিরোধ তীব্র হয়। প্রথমে ট্রাম্প নথি প্রকাশের বিলের বিরোধিতা করলেও পরে রিপাবলিকানদের সমর্থন বাড়তে দেখে সিদ্ধান্ত বদলান।
এপস্টাইন ফাইলস ছাড়াও আরও নানা বিষয়ে গ্রিন প্রকাশ্যে ট্রাম্পকে সমালোচনা করেন—দৈনন্দিন ব্যয় কমাতে ব্যর্থতা, শুল্কনীতির বিরোধিতা এবং ইসরাইলসহ কিছু দেশকে ‘অতিরিক্ত প্রাধান্য’ দেওয়ার অভিযোগ এসবের মধ্যে অন্যতম।
পরবর্তীতে ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গ্রিনকে লক্ষ্য করে একের পর এক সমালোচনামূলক পোস্ট করেন, তাকে “বিশ্বাসঘাতক” ও “মানসিকভাবে অস্থির” বলেও আখ্যা দেন।
তবে শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস রিপাবলিকানদের প্রচেষ্টায় বিচার মন্ত্রণালয়কে এপস্টাইন-সংক্রান্ত সব নথি প্রকাশে বাধ্য করে। বিলটি কংগ্রেসে পাস হওয়ার পরদিনই ট্রাম্প স্বাক্ষর করে একে আইনে পরিণত করেন।