ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হত্যাযজ্ঞ চলছেই। সবশেষ ইসরায়েলি হামলায় একদিনে আরও ১১৫ ফিলিস্তিনি নিহত ও আরও অন্তত ২১৬ জন আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার (১৬ মে) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দখলদারদের নির্বিচারে হামলায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।

শনিবার (১৭ মে) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির বরাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু ও কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় চলমান ইসরায়েলি অভিযানে গাজা উপত্যকায় মোট নিহত হয়েছেন ৫৩ হাজার ১১৯ জন। আহতের সংখ্যা গিয়ে পৌঁছেছে ১ লাখ ২০ হাজার ২১৪ জনে। আর হতাহতদের মধ্যে ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।

মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। কারণ অনেকেই ধ্বংসস্তূপের তলায় চাপা পড়ে আছেন। তাদেরকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

আনাদোলু তাদের প্রতিবেদনে জানায়, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ‘গিডিয়নের রথ’ অভিযানের শুরুতে গত ২৪ ঘণ্টা ধরে ব্যাপক আক্রমণ চালানো হয়েছে। যার মাধ্যমে সেনারা গাজা উপত্যকার এলাকাগুলো দখল করবে। অভিযানের আগে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে উত্তর গাজার কিছু অংশ ছেড়ে চলে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আল জাজিরা নিজেদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, শরণার্থী শিবির ও চিকিৎসাকেন্দ্রগুলো লক্ষ্য করে নিয়মিত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে আইডিএফ। গত কয়েক দিনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাজার উত্তরের জাবালিয়া শরণার্থী শিবির। গাজার মধ্যাঞ্চলের দেইর আল-বালাহর দক্ষিণ-পূর্ব অংশে গোলাবর্ষণ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। 

পাশাপাশি আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের কাছে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের একটি তাঁবুতেও হামলা চালানো হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।

এ ছাড়া গাজার দক্ষিণের রাফাহ শহরেও বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান। একটি ড্রোন হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫ জন। খান ইউনুসের পূর্বাঞ্চল থেকে সরে যাওয়ার সময় আরেকটি হামলায় একটি চলন্ত গাড়িতে নিহত হন দাদা ও তার দুই নাতি।

এর আগে, গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে ইসরায়েল। তবুও থেমে নেই তাদের বর্বরতা। এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় বইছে।